সে আপনারা যতই আমাদের শিকড় কেড়ে নিন, সলিলসমাধি দিন, ক'দিন পরে দেখবেন নিজেরাই শুকিয়ে মরছেন তেষ্টায় – ঠিক মনে পড়ছে না, কোথায় যেন লিখে রেখেছি এসব। আমাদের জল, আমাদের জমিন, নিন নিন, সবই লুটে নিন – তবে মনে রাখবেন, সেই আমরাই কিন্তু লড়ে মরব আপনাদের আগামী প্রজন্মের জন্য। জল-জঙ্গল-জমিনের তরে এ যুদ্ধ কিন্তু আমাদের একার নয়। ভেবে দেখুন দেখি একবার, প্রকৃতি থেকে আদৌ কি আলাদা আমরা কেউ? ধূলা-মাটি-পাহাড়ের সঙ্গে আদিবাসীর নাড়ির যোগ, একসুতোয় বাঁধা সব, নিজেদের স্বতন্ত্র বলে ভাবতেই পারি না। দেহওয়ালি ভিলি ভাষায় যে ক'টা কবিতা লিখেছি, তার ছত্রে ছত্রে ধরা আছে আদিবাসী সমাজের মূল্যবোধ।
আমাদের সমাজের যে বিশ্ববীক্ষা, তা আগামীর বুনিয়াদ বই আর কিছু নয়। এ জীবনবোধ আপনারা চান বা না চান, এই পথে কিন্তু ফিরতেই হবে আপনাদেরও, নয়তো জোট বেঁধে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও রাস্তাই খোলা পাবেন না।
দু'বিঘে জমিন শুধু
ভাই রে...
ধূলামাটি পুড়িয়ে
খল-নুড়ি গুঁড়িয়ে
কার কোথা কীবা হয়, বুঝিবি না হায়
রে।
আকাশগঙ্গা তারা হাতের মুঠোয় ভরা,
ঝলমলে বাড়ি তোর
তাইরে কি নাইরে!
খ্যামতা সে খাসা তোর ভাই রে...
ইলশেগুঁড়ির ছিটে পেঁজা পেঁজা কালসিটে
হুট করে মরে গেলে কীবা হয় বলতো?
জগতশ্রেষ্ঠ ওহে,
ল্যাবরেটরির দেহে
বিকারে ভরিয়া রাখি তোর শ্রেষ্ঠত্ব।
কীট, পোকা, জোনাকি, তোর জেনে হবে কী?
শাল, শিশু, বুড়োবট, তোর সাথে সঙ নাই...
আকাশে বাঁধিবি বাড়ি, তাই তো করিলি
আড়ি
বসুধা মায়েরে ছাড়ি চলে গেলি দূর
গাঁয়।
আশা করি খেপবিনে, তুই তেড়ে আসবিনে,
"চাঁদের মরদ" যদি টোন কেটে
বলি...
না না তুই পাখি নোস! স্বপনে ওড়ার
দোষ,
পড়াশোনা খাসা তোর বাবুয়ানি বুলি।
একগুঁয়ে জেদি বড়ো ভাই রে...
গাইঁয়া গাঁওয়ার মোরা, দু'পায়ে জমেছে
খরা
এটুকু ভিক্ষে শুধু চাই রে –
ক্লান্ত দিনের ভাড়া, দু'বিঘে জমিন
ছাড়া
বল্ দেখি কোথা তবে যাই রে?
ভাই রে...
ধূলামাটি পুড়িয়ে খল-নুড়ি গুঁড়িয়ে
কার কোথা কীবা হয়, বুঝিবি না হায়
রে।
আকাশগঙ্গা তারা হাতের মুঠোয় ভরা,
ঝলমলে বাড়ি তোর তাইরে কি নাইরে!
ইলশেগুঁড়ির ছিটে পেঁজা পেঁজা কালসিটে
হুট করে মরে গেলে কীবা হয় বলতো?
জগতজিষ্ণু ওরে
ল্যাবরেটরির জ্বরে
পাই পাই গুনে রাখি তোর শ্রেষ্ঠত্ব।
অনুবাদ: জশুয়া বোধিনেত্র (শুভঙ্কর দাস)