“এই পাত্রটা ভীষণ দরকারি। আমাদের পাড়া [জনপদ] এখনও আঁধার। সেইজন্যই তো আমি হাঁটছি। অন্তত বিদ্যৎটুকু তো দেবে আমাদের,” বলছেন নাসিকের কৃষক সমাবেশে আসা ৪৭ বছর বয়সী কৃষিজীবী মঙ্গল ঘাডগে, তাঁর মাথার উপর ভারসাম্য বুঝে রাখা ট্যাবলেটের আকারের একটি সৌরপ্লেট, “সূর্যের আলো সরাসরি [ধাতব] পাত্রটির উপর পড়ে এবং তাপ সঞ্চয় করে রাখে। সন্ধেবেলা আমরা মোবাইল ফোন বা টর্চ চার্জ করার জন্য এটা ব্যবহার করি। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে।”

মঙ্গলের মতো (উপরের কভারচিত্রে) , তাঁর বহু প্রতিবেশীই এখন ৪০ ঘর বিশিষ্ট নাসিক জেলার দিন্দোরি তালুকের সিন্দওয়াড় গ্রাম থেকে প্রায় আধ কিলোমিটারের দূরত্বে অবস্থিত এই জনপদটিতে সৌরপ্লেটগুলি ব্যবহার করেন। এই পাড়ার সকল অধিবাসীই মহাদেব কোলি নামে তপশিলি জনজাতিভুক্ত। তাঁদের অধিকাংশই বনবিভাগের জমিতে ধান, রাগি ও তুর (অড়হর) চাষ করেন। ২০১৮ সালে তেমন ভালো বর্ষা না হওয়ার অর্থ তাঁদের সমস্ত ফসল নষ্ট হয়েছে অথবা ফলন হয়েছে যৎসামান্য।

মঙ্গল বছরখানেক আগে সৌরপ্লেটটি কিনেছেন। “আমাদের পাড়ার একজন এই পাত্রটি কিনেছিল। সেই দেখে আমি তাঁকে একটা এনে দিতে বললাম। তারপর অনেকেই কিনতে শুরু করল। দাম ২৫০ টাকা - আমাদের মতো মানুষের একদিনের মজুরি,” তিনি বললেন।

A man smiling during the march .
PHOTO • Jyoti Shinoli
Two men during the march
PHOTO • Jyoti Shinoli

জানু টোকরে (বাঁদিকে) এবং পবন সোনু (ডানদিকে): ‘আমাদের বাচ্চারা অন্ধকারে কেমন করে পড়াশোনা করবে?’

মঙ্গলের বাড়িতে একটি রিচার্জেবল আলো আছে, তাঁর ছেলে, যে কিনা এখন ১০ শ্রেণির ছাত্র, সে রাতের বেলা পড়াশোনা করার জন্য এই বাতিটি ব্যবহার করে। “এই পাত্রটা আছে বলে ছেলেটা অন্ধকারেও পড়তে পারে। এই আঁধারে সামান্য একটু আশার আলো,” মৃদু হেসে তিনি বলেন।

কৃষক সমাবেশে অনেককেই মাথায় কিংবা হাতে এই সৌরপ্লেট বা প্যানেলগুলি নিয়ে হাঁটতে দেখা গেল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পায়ারপাড়া নামে ১০৮ ঘর বিশিষ্ট (আদমশুমারি ২০১১) জনপদের যথাক্রমে ২৮ এবং ৩০ বছর বয়সী কৃষক পবন সোনু এবং জানু টোকরে। তাঁরাও জলাভাব এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের কথা বলছিলেন।

“গ্রামের বাইরের দিকে আমাদের ১২টা ঘর। গ্রামের ভেতরে বিজলি আছে। আমাদের নেই। আমাদের বাচ্চারা অন্ধকারে পড়বে কেমন করে?” পবনের প্রশ্ন। “রেশনে এক মাসে আমরা সাকুল্যে দুই লিটার তেল পাই। তা দিয়ে রান্না করব না আলো জ্বালব? সরকার আমাদের জমির পাট্টা বা মৌলিক পরিষেবার অধিকার কোনওটাই সুনিশ্চিত করছে না। যে দুটো টাকা আমরা পাই তাই দিয়ে কেনই বা আমাদের এইসব জিনিস [সৌরপ্লেট] কিনতে হবে?”

বাংলা অনুবাদ : স্মিতা খাটোর

Jyoti Shinoli

جیوتی شنولی پیپلز آرکائیو آف رورل انڈیا کی ایک رپورٹر ہیں؛ وہ پہلے ’می مراٹھی‘ اور ’مہاراشٹر۱‘ جیسے نیوز چینلوں کے ساتھ کام کر چکی ہیں۔

کے ذریعہ دیگر اسٹوریز جیوتی شنولی
Translator : Smita Khator

اسمِتا کھٹور، پیپلز آرکائیو آف رورل انڈیا (پاری) کے لیے ’ٹرانسلیشنز ایڈیٹر‘ کے طور پر کام کرتی ہیں۔ وہ مترجم (بنگالی) بھی ہیں، اور زبان اور آرکائیو کی دنیا میں طویل عرصے سے سرگرم ہیں۔ وہ بنیادی طور پر مغربی بنگال کے مرشد آباد ضلع سے تعلق رکھتی ہیں اور فی الحال کولکاتا میں رہتی ہیں، اور خواتین اور محنت و مزدوری سے متعلق امور پر لکھتی ہیں۔

کے ذریعہ دیگر اسٹوریز اسمیتا کھٹور