জয়পুর হাই কোর্টের চত্ত্বরটি বেশ মনোরম। কিন্তু কোর্টের বাগানে একটি বস্তু আছে যা অনেকের কাছেই দৃষ্টিকটু। সম্ভবত এটিই দেশের একমাত্র আদালত চত্বর যেখানে “আইনদাতা মনুর” একটি মূর্তি আছে ( কভারের ছবি দেখুন )।
মনুর অস্তিত্বের যেহেতু কোনো প্রমাণ নেই, তাই মূর্তিটির অবয়ব শিল্পীর কল্পনা দিয়েই তৈরি হয়েছে। কল্পনার পরিসরটিও সীমিত। এখানে মনুর চেহারা সিনেমার পর্দার ‘ঋষি’-দের মত।
কিংবদন্তী অনুসারে, মনু নামের এক ব্যক্তি মনুস্মৃতি রচনা করেছিলেন। বহু শতাব্দী আগের সেই ‘ স্মৃতি ’গুলো আসলে আমাদের দেখায় কী ভাবে এবং কী নিয়মের মাধ্যমে ব্রাহ্মণরা সমাজের ওপর তাদের কর্তৃত্ব কায়েম করার চেষ্টা করেছিল। প্রতিটা নিয়মই উচ্চবর্ণের মানুষদের প্রতি ভীষণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং ব্রাহ্মণ্যবাদী। ‘ স্মৃতি’ -র সংখ্যা অনেক। বেশিরভাগই লেখা হয়েছিল ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেকার সময়কালে। বহু দিন ধরে বহু লেখক মিলে এই স্মৃতিগুলিকে সংকলিত করেছেন। এগুলির মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত হল মনুস্মৃতি । বিভিন্ন জাতের মানুষকে একই অপরাধের জন্য বিভিন্ন রকমের বিধান দেওয়া এই গ্রন্থের এক অত্যাশ্চর্য দিক।
এই স্মৃতি অনুযায়ী, নিম্ন জাতের মানুষের জীবনের মূল্য প্রায় নেই বললেই চলে। যেমন, এক শুদ্রের হত্যা করলে তার শাস্তি কী হবে দেখা যাক। “ব্যাঙ, কুকুর, প্যাঁচা অথবা কাক মারার যা শাস্তি, শুদ্রের হত্যা করলেও একই শাস্তি।” বড় জোর, কোনো “নীতিনিষ্ঠ শুদ্র”-এর হত্যার শাস্তি ব্রাহ্মণ হত্যার প্রায়শ্চিত্তের তুলনায় এক-ষোড়োশাং কম।
আইনের চোখে সবাই সমান – এই কথা যে ব্যবস্থার মূল মন্ত্র – তা কোনোদিন মনুস্মৃতি -কে নকল করতে পারে না। আদালত চত্ত্বরে সেই মনুর মূর্তি তাই রাজস্থানের দলিতদের ক্রুদ্ধ করে। আরো সাঙ্ঘাতিক, আদালত চত্ত্বরে ভারতীয় সংবিধানের রচয়িতার কোনো মূর্তি কিন্তু নেই। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকারের একটি মূর্তি আছে রাস্তার মোড়ে, রাস্তার দিকেই মুখ করে। অন্যদিকে, আদালত চত্ত্বরে আগত সমস্ত মানুষকেই দেখতে হয় ‘মহান’ মনুর মুখ।
রাজস্থান অবশ্য মনুর উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এই রাজ্যে গড়ে প্রতি ৬০ ঘন্টায় একজন দলিত মহিলা ধর্ষিতা হন। প্রতি ৯ দিনের একটু বেশি সময়ে খুন হন একজন দলিত। প্রতি ৬৫ ঘন্টায় গুরুতর ভাবে জখম হন একজন দলিত। প্রতি পাঁচ দিন অন্তর অন্তত একটি দলিত পরিবারের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এবং প্রতি ৪ ঘন্টা অন্তর একটি করে অভিযোগ জমা পড়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ‘অন্যান্য’ ধারায়। ‘অন্যান্য’ মানে খুন, ধর্ষণ, অগ্নি-সংযোগ অথবা গুরুতর আঘাত ছাড়া অন্য কোনো অপরাধ।
দোষীদের সাজা পাওয়ার ঘটনা বিরল। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ২ থেকে ৩ শতাংশ। অনেক অপরাধের ঘটনা আদালত পর্যন্ত পৌঁছতেই পারে না।
অসংখ্য অভিযোগ ‘ফাইনাল রিপোর্ট’-এ আটকা পড়ে শেষ হয়ে যায়। অনেক গুরুতর অভিযোগকে ইচ্ছে করে আর এগোতেই দেওয়া হয় না।
ভানওয়ারি দেবী জানাচ্ছেন, “সমস্যা শুরু হয় গ্রাম থেকেই।” ভানওয়ারি দেবীর মেয়ে আজমেরের একটি গ্রামে ধর্ষিত হয়েছিল। “গ্রামবাসীরা একটি জাত পঞ্চায়েত বসায়। তারা অপরাধের শিকার হয়েছে যে, তাকেই বাধ্য করে তার আক্রমণকারীর সঙ্গে মিটমাট করে নিতে। তারা বলে, ‘পুলিশের কাছে যাবে কেন? আমাদের সমস্যার সমাধান আমরাই করব।’”
সমাধান বলতে, অপরাধের শিকার হয়েছে যে, তাকেই যেতে হবে অপরাধীর কাছে। ভানওয়ারিকে পুলিশের কাছে যেতেই দেওয়া হয়নি।
এমনিতেও, কোনো দলিত বা আদিবাসীর থানায় প্রবেশ বিপদ ডেকে আনতে পারে। গেলে কী হয়? ভরতপুর জেলার কুমহের গ্রামে কুড়ি জন সমস্বরে জানালেন, “২২০ টাকা প্রবেশমূল্য দিতে হয়। আর তদন্ত চালানোর জন্য তার অনেক গুণ বেশি।”
যদি অপরাধী হয় উঁচু জাতের, তাহলে পুলিশ সাধারণত দলিতদের অভিযোগ করা থেকে নিরস্ত করার চেষ্টা করে। হরি রাম বলছেন, “ওরা আমাদের জিজ্ঞেস করে, ‘কেন? বাপ কি ছেলেকে মারে না? ভাইয়ে ভাইয়ে কি মারপিট হয় না? কাজেই এসব ভুলে গিয়ে অভিযোগ তুলে নিলেই তো হয়।’”
“আরেকটা সমস্যাও আছে,” রাম খিলাড়ি হাসতে হাসতে বললেন, “পুলিশ তো অন্য পক্ষের থেকেও টাকা নেয়। তারা যদি বেশি টাকা দেয়, তাহলে তো আমাদের কিছুই করার থাকে না। আমাদের লোকজন দরিদ্র, তারা বেশি টাকা দিতেও পারে না।” ২০০০-৫০০০ টাকা দিয়েও হেরে যায়।
এরপরে, যে পুলিশ তদন্ত করতে আসবে, সে ধরে নিয়ে যেতে পারে অভিযোগকারীকেই। যদি অভিযোগ করে কোনো দলিত, আর অভিযোগের তীর থাকে উচ্চবর্ণের কারুর দিকে, তাহলে এটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অনেক ক্ষেত্রে কনস্টেবলও উঁচু জাতেরই হয়।
“একবার যখন আমি উচ্চবর্ণের অত্যাচারের শিকার হয়েছিলাম, তখন ডেপুটি ইন্সপেক্টার জেনারাল আমারই ঘরের সামনে পুলিশের পাহারা বসিয়েছিলেন,” আজমেরে জানালেন ভানওয়ারি। “সেই হাবিলদার সারাদিন যাদবদের বাড়িতে গিয়ে মদ আর খাবার খেত। আমাকে নিয়ে কী করা যেতে পারে এই বিষয়ে তাদের পরামর্শও দিত। আরেকবার, আমার স্বামীকে খুব মারধোর করা হয়েছিল। তখন তারা এফআইআর নিতে অস্বীকার করে আর আমাকে গালাগাল দেয়। বলে, ‘কোন সাহসে মহিলা (তাও আবার দলিত) হয়ে তুমি এখানে একা এসেছ?’ ওরা প্রচন্ড রেগে গেছিল।”
আমরা ফিরে যাই কুমহের-এ। সেখানে চুন্নি লাল জাতভ জানাচ্ছেন, “সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত বিচারপতিরও একজন পুলিশ কন্সটেবলের মত ক্ষমতা নেই।”
“এই কন্সটেবলই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে,” জানাচ্ছেন তিনি। “বিচারপতিরা আইন বদলাতে পারেন না। দুই পক্ষের শিক্ষিত উকিলদের কথা তাঁদের শুনতে হয়। কিন্তু এখানে হাবিলদাররা নিজেরাই আইন তৈরি করে। তারা যা খুশি করতে পারে।”যদি অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করাও যায়, তার পরে শুরু হয় নতুন সমস্যা। সমস্যা “প্রবেশমূল্য” আর অন্যান্য টাকা বাদ দিয়ে। সাক্ষীর বয়ান নিতে পুলিশ দেরি করে। এছাড়া, ভানওয়ারি বলছেন, “ওরা ইচ্ছে করে অপরাধীদের ধরে না।” এদের “পলাতক” বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ তখন বলে যে যেহেতু এরা পালিয়ে গেছে, তাই তদন্ত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
অনেক গ্রামে আমরা দেখেছি যে এই “পলাতক”-রা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই কারণে, আর সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ায় নিষ্ক্রিয়তার ফলে মারাত্মক দেরি হয়ে যায়।
এর ফলে গ্রামের ভেতরে দলিতদের থাকতে হয় তাদের অত্যাচারীর দয়ায়। ফলত, অনেক সময় তারা আপোষ করে নেয়। ধোলপুর জেলার নাকসোদা গ্রামের রামেশ্বর জাতভের সঙ্গে ঘটেছিল এক অদ্ভুত ঘটনা। তার গ্রামের উঁচু জাতের লোকেরা তার নাকে পাটের নোলক (এক মিটার লম্বা, ২ মিলিমিটার পুরু পাট দিয়ে তৈরি) পরিয়ে গোটা গ্রামে সেটা টানতে টানতে তাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
সংবাদমাধ্যমের প্রচার পাওয়া সত্ত্বেও রামেশ্বরের বাবা মাঙ্গি লালসহ এই ঘটনার সমস্ত সাক্ষী তাদের বয়ান ফিরিয়ে নিয়েছে। এবং হ্যাঁ, অত্যাচারিত নিজেই জানিয়েছে যে অভিযুক্তরা অপরাধী নয়।
কারণ? “আমাদের এই গ্রামেই থাকতে হবে,” বলছেন মাঙ্গি লাল। “কে আমাদের রক্ষা করবে? আমরা ভয়ে মরে আছি।”
প্রবীণ উকিল বানোয়ার বর্গি নিজে দলিত। তিনি জয়পুরের একটি আদালতে আমাকে বললেন, “যে কোনো অত্যাচারের মামলা নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি এগোতে হয়। যদি ছ-মাসের বেশি সময় চলে যায়, তাহলে সাজা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সাক্ষীদের গ্রামের ভেতর ভয় দেখানো হয়। তারা বয়ান দিতে চায় না।”
সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া, দেরি হওয়া মানে পক্ষপাতদুষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণকে আরো নষ্ট করার জন্য গ্রামের উচ্চবর্ণরা পুলিশের সাথে হাত মেলাবে। মামলা যদি বা শুরু হয়, সমস্যা বাধে উকিলদের নিয়ে। “সব উকিল বিপজ্জনক”, বলছেন চুন্নি লাল জাতভ। “হতে পারে আপনার উকিল বিরোধী পক্ষের সাথে হাত মেলাচ্ছে। যদি তাকে ঘুষ দেওয়া হয়, তাহলে আপনি গেলেন!”
এছাড়া রয়েছে খরচের সমস্যা। “একটা আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা আছে বটে, কিন্তু সেটা বড্ড জটিল”, জানালেন চেতন বৈরওয়া, জয়পুর আদালতের স্বল্প-সংখ্যক দলিত উকিলদের মধ্যে একজন। “ফর্মে বার্ষিক আয় লিখতে হয়। অনেক দলিত, যাঁদের রোজগার দৈনিক অথবা অস্থায়ী, তাঁরা এটা দেখে বিভ্রান্ত হয়ে যান। তাছাড়া অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান এতই কম, যে এই সহায়তা অনুদান ব্যবস্থার কথা প্রায় কেউই জানেন না।”
আইনের জগতে দলিতদের সংখ্যা কম হওয়াটাও একটা সমস্যা। জয়পুর আদালতে প্রায় ১২০০ উকিলের মধ্যে মাত্র ৮ জন দলিত। উদয়পুরে এই সংখ্যা ৪৫০-এর মধ্যে ৯। গঙ্গানগরে ৪৩৫-এর মধ্যে ৬ জন উকিল দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। আরো উঁচু স্তরে প্রতিনিধিত্ব তো আরো কম। হাই কোর্টে কোনো তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিভুক্ত বিচারপতি নেই।
রাজস্থানে কিছু দলিত মুন্সেফ আছেন বটে, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় না, জানালেন কুমহেরের চুন্নি লাল। “এরা সংখ্যায় খুবই কম, এবং এরা নিজেদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা তো দূরের কথা, তাদের অস্তিত্বই কাউকে টের পেতে দিতে চায় না।”
মামলা আদালতে পৌঁছলে, পেশকারের [আদালতের কেরানি] সাথে সমঝোতা করতে হয়। “তাকে ঘুষ না দিলে কোর্টের তারিখ পাওয়া নিয়ে প্রচন্ড সমস্যা হয়” – এমনটাই জানানো হয় আমাকে বহু জায়গায়। চুন্নি লাল বলছেন, “গোটা ব্যবস্থাটাই এত সামন্ততান্ত্রিক যে পেশকারকেও তার অংশটা দিতে হবে। অনেক ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে মুন্সেফদের জন্য দুপুরের খাবার আসে পেশকারের পয়সায়। আমি এইসব কথা সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস করে দিয়েছি। তারা এটা নিয়ে লিখেছে।”
আর আছে অত্যন্ত কম সাজার হার। কিন্তু এটাই শেষ নয়।
জয়পুর হাই কোর্টের প্রবীণ উকিল প্রেম কৃষ্ণ জানাচ্ছেন, “বিচার ভালো হলেও অনেক সময় দেখা যায় যে যাঁরা সেই সাজা বলবৎ করবেন, তাঁদের হাবভাব খুবই খারাপ। প্রেম কৃষ্ণ রাজস্থানের পিপলস ইউনিয়ন অফ সিভিল লিবার্টিস-এর সভাপতি। “তফসিলি জাতির ক্ষেত্রে একদিকে আছে অর্থনৈতিক সমস্যা, অন্যদিকে রয়েছে রাজনৈতিক সংগঠনের অভাব। এমনকি দলিত সরপঞ্চরাও এমন এক আইনি ব্যবস্থার মধ্যে বন্দি যাকে তারা ঠিক বুঝেই উঠতে পারে না।”
টঙ্ক জেলার রাহোলিতে বরখাস্ত হয়ে যাওয়া দলিত সরপঞ্চ অঞ্জু ফুলওয়ারিয়া তার কেস লড়ার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে এখন অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব। “আমাদের মেয়েদের ভালো বেসরকারি স্কুল ছাড়িয়ে দিয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি করতে হয়েছে।” এই স্কুলের শিক্ষকরাই দলিতদের সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য ছাত্রদের ইন্ধন জুগিয়েছিলেন।
নাকসোদাতে মাঙ্গি লালের প্রায় ৩০,০০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে নাকে ফুটো করে দড়ি পরানোর মামলায়। তিনি এবং অপরাধের শিকার তাঁর ছেলে এখন হাল ছেড়ে দিয়েছেন। খরচ চালানোর জন্য এই পরিবারকে তাঁদের অল্প জমির এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি করে দিতে হয়েছে।
রাজস্থানের নতুন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোট এই ব্যবস্থাতে কিছু পরিবর্তন আনতে চান বলে মনে হয়। তিনি বলেছেন যে তাঁ সরকার এই ফাইনাল রিপোর্ট আর বন্ধ হয়ে যাওয়া মামলাগুলিকে খতিয়ে দেখতে রাজি আছে। যদি দেখা যায় যে ইচ্ছে করে অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিংবা অপরাধকে লুকোনোর চেষ্টা করা হয়েছে তাহলে “যে বা যাঁরা তদন্তকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের শাস্তি হবে”, জয়পুরে একথা তিনি আমাকে জানিয়েছেন। গেহলোট চাইছেন পঞ্চায়েতি আইনে এমন কিছু পরিবর্তন আনতে যাতে দুর্বল অংশের মানুষ সরপঞ্চের মত পদ থেকে “অবৈধ ভাবে অপসারিত না হতে পারেন।”
অঞ্জু ফুলওয়ারিয়ার মত কিছু সরপঞ্চ বিজেপি জমানায় অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। সেই ব্যবস্থাকে পালটে ফেললে গেহলোটের রাজনৈতিক মুনাফা হবে। কিন্তু তাঁর সামনে এক বিশাল, কঠিন কাজ। ব্যবস্থার প্রতি ভরসা এই সময়ে দাঁড়িয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
রাম খিলাড়ি জানালেন, “আইনি অথবা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার ওপর আমাদের বিন্দুমাত্র ভরসা নেই। আমরা জানি, আইন শুধু বড় বড় মানুষদের জন্য।”
হাজার হোক, এ তো রাজস্থান। এখানে মনুর দীর্ঘ ছায়া আদালত চত্ত্বরে এসে পড়ে। এখানে আম্বেদকার বহিরাগত।
দুইভাগে বিভক্ত ১৯৯১-৯৬ সালের সময়কাল নিয়ে রচিত এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত অপরাধ-সংক্রান্ত তথ্য জাতীয় তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি কমিশনের ১৯৯৮ সালের রাজস্থান রাজ্য রিপোর্ট থেকে প্রাপ্ত। অনেক পরিসংখ্যানেরই এতদিনে আরও অবনতি ঘটে থাকতে পারে।
দুইভাগে বিভক্ত প্রতিবেদনের এই দ্বিতীয় কিস্তিটি প্রথমবার – ১৯৯৯ সালের ১১ই জুলাই – ‘দ্য হিন্দু’-তে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০০০ সালে , এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড ফর হিউম্যান রাইটস জার্নালিজম পুরস্কারটি পায়।
বাংলা অনুবাদ: সর্বজয়া ভট্টাচার্য