ডানহাতে খোলা তলোয়ার, বাঁহাতে ঘোড়ার জিন, চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত তামিলনাড়ুর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে কিংবদন্তি থেকে উঠে এসেছিলেন রানী ভেলু নাচিয়ার – মানুষ থেকে ক্যামেরা, সব্বার নজর ছিল তাঁরই দিকে। তামিলভূমির অন্যান্য বীর সন্তান, যথা ভি. ও. চিদাম্বরম পিল্লাই, সুব্রহ্মণ ভারতী, মারুথু ভাতৃদ্বয় প্রমুখের সঙ্গে একই ট্যাবলোতে স্থান পেয়েছিলেন ঐতিহাসিক সেই রানী।

তবে নয়াদিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে কিন্তু 'স্বাধীনতা সংগ্রামে তামিলনাড়ুর ভূমিকা' বিষয়ক এই ট্যাবলোটা স্থান পায়নি, সে ব্যাপারে বাধ সেধেছিল যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের দ্বারা গঠিত একটি 'ওস্তাদ' কমিটি। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আর্জি জানালেও কোনও লাভ হয়নি। শেষমেশ রাজ্যের নিজস্ব কুচকাওয়াজেই ব্যবহার করা হয় ট্যাবলোটি, এবং বিপুল পরিমাণে সাড়া পড়ে যায় চারিদিকে।

হাজারটা আগডুম বাগডুম কথা বলেছিল শেয়াল 'পণ্ডিতদের' সেই কমিটি, তার মধ্যে এটাও ছিল: বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রার বেশিরভাগ চরিত্রই নাকি "সর্বভারতীয় দর্শকের কাছে অচেনা।" এই কথাটা মেনে নিতে নারাজ অক্ষয়া কৃষ্ণামূর্তি। ঐতিহাসিক সেই চরিত্রগুলির মধ্যে একজনের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ আছে তাঁর: ভেলু নাচিয়ার, যিনি ১৭৯৬ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে অবধি ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধ করে শিবগঙ্গাইয়ে (অধুনা তামিলনাড়ুর একটি জেলা) রাজত্ব করেছিলেন।

"ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় সেই যে একটি নৃত্যনাট্যে ভেলু নাচিয়ারের প্রধান চরিত্রটিতে অভিনয় করেছিলাম, সেদিনই আমার জীবনে নতুন মোড় আসে একটা," জানালেন তিনি।

"তবে শুধুই নাচগান বা অভিনয় ভাববেন না যেন," বুঝিয়ে বললেন অক্ষয়া। গানের কথায়, ছন্দে ও সুরে দেহের প্রতিটি কোষে জ্বলে উঠেছিল 'বীরমাঙ্গাই'-য়ের (রানীর জনপ্রিয় নাম) তেজ। ধ্রুপদী নৃত্যকলায় প্রশিক্ষিত অক্ষয়ার মনে পড়ে আন্তর্বিদ্যালয় প্রতিযোগিতার দিনটাতে কেমন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি, বুঝতেই পারছিলেন না আদৌ অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা। তবুও মনের জোরে দেহ-মন উজাড় করে দিয়েছিলেন তিনি।

মঞ্চ থেকে নামতে না নামতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন অক্ষয়া। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন দিতে হয়েছিল। "হাতে স্যালাইনের বোতল নিয়ে পুরস্কার নিতে গিয়েছিলাম – দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলাম যে!" এই ঘটনার থেকে নিজের ক্ষমতার উপর আস্থা জন্মায় তাঁর। অচিরেই "দুঃসাহসী" হয়ে ওঠেন তিনি, একে একে মোটরসাইকেল, গাড়ি সবকিছুই চালাতে শিখে যান।

Tamil Nadu's tableau for the Republic Day parade, with Rani Velu Nachiyar (left), among others. The queen is an inspiration for Akshaya Krishnamoorthi
PHOTO • Shabbir Ahmed
Tamil Nadu's tableau for the Republic Day parade, with Rani Velu Nachiyar (left), among others. The queen is an inspiration for Akshaya Krishnamoorthi
PHOTO • Shabbir Ahmed

প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে তামিলনাড়ুর ট্যাবলো, বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন রানী ভেলু নাচিয়ার (বাঁদিকে)। অক্ষয়া কৃষ্ণমূর্তির জীবনে অনুপ্রেরণা উৎস এই রানী

অক্ষয়া পরিবারের প্রথম স্নাতক স্তর পার করা সদস্য। এছাড়াও তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী, উদ্ভাবক এবং সেই সঙ্গে প্রেরণাদায়ী বক্তা।

আর এতসব যে করে ফেলেছেন তিনি, তা মাত্র ২১ বছর বয়সেই!

তামিলনাড়ুর ইরোড জেলার আরিয়াপ্পামপালায়ম শহরে (সত্যমঙ্গলমের কাছেই) নিজের মা-বাবা, ভাই, কাকিমা, একটি পোষা কুকুর এবং অজস্র পাখি (বাজারিগার, অর্থাৎ বদ্রিকা) নিয়ে থাকেন অক্ষয়া। রাজ্যের মানচিত্রে এ জনপদ কেবলই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র একটি বিন্দু। তবে ভারতের মানচিত্রে তাঁর শহরের নাম দাগিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন বাণিজ্য প্রশাসনের (বিবিএ) এই স্নাতক।

তৃণমূল স্তর থেকে উঠে আসা ব্যবসা-বাণিজ্যের ইতিহাস বহন করে তামিলনাড়ুর এই বলয়টি – যার মধ্যে পড়ছে কোয়েম্বাটোর, কারুর ও তিরুপ্পুর। ক্লাস টেনের পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি অক্ষয়ার মা-বাবা, নিজস্ব জমিজমাও নেই তাঁদের – তাই-ই বোধহয় বাণিজ্যের এ সুপ্রাচীন পরম্পরায় অল্প বয়েসেই নাম লিখিয়ে ফেলেছেন তিনি।

২০২১ সালের অক্টোবর মাসে পারির তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যখন যাই, তখন মুচকি হেসে বলেছিলেন: "জানেন তো, বয়সটা আমার একাধারে শক্তি এবং দুর্বলতা।" হলুদ-চাষি থিরু মূর্তির খেতিবাড়ি পরিদর্শন করার পর তাঁর বৈঠকখানায় তখন জমিয়ে আড্ডা চলছে চা আর বাজ্জি (তেলেভাজা) সহযোগে। সে আড্ডাটা ভোলার নয়। অক্ষয়া তাঁর রংরঙের স্বপ্নের কথা বলতে বলতে যেভাবে টোকা মেরে মুখের উপর থেকে ছোট্ট করে ছাঁটা চুলের রাশি সরিয়ে দিচ্ছিলেন, তাতে বেবাক স্বরে ফুটে উঠছিল সাবলীল স্বচ্ছতা।

তাঁর প্রিয়তম উক্তিটিও সে কথাই বলে: "আগামীর কাজ আজকে করুন, স্বপ্নেরা এভাবেই বাস্তব হয়ে ওঠে।" নিজের জীবন আর ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন কলেজে ঘুরে ঘুরে দেওয়া প্রেরণামূলক ভাষণেও এই উক্তিটি ব্যবহার করেন অক্ষয়া। তাঁর ব্র্যান্ডের নাম 'সুরুকুপাই ফুডস্'। তামিল ভাষায় সুরুকুপাইয়ের অর্থ দড়ি দিয়ে বাঁধা বটুয়া – পুরানো দিনের তরে মন-কেমন করা, স্থিতি, হিসেব করা চলা জীবন, একে একে সবই ধরা পড়ে এই শব্দবন্ধে।

তবে এই যে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জেদ, এটা কিন্তু মোটেও খুব একটা আশ্চর্যের কিছু নয়। "কলেজে পড়ার সময় বন্ধুরা মিলে একটা ট্রাস্ট বানিয়েছিলাম, নাম দিই উলিয়িন উরুভম, অর্থাৎ ভাস্করের ছেনি। সংগঠনের সবাই-ই পড়ুয়া। সংকল্প একটাই, যাতে আমাদের মতো ছোটো ছোটো শহর থেকে উঠে আসা মানুষেরা জীবনের পথে অগ্রসর হতে পারে। ২০২৫ আসতে না আসতে যাতে ২,০২৫ জন অগ্রণী ভূমিকা নিতে সক্ষম হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।" ইচ্ছেটা তো বেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষী। তবে হ্যাঁ, অক্ষয়া নিজেও কম যান না।

Akshaya in Thiru Murthy's farm in Sathyamangalam. She repackages and resells the turmeric he grows
PHOTO • M. Palani Kumar

অক্ষয়া, সত্যমঙ্গলমে থিরু মূর্তির খামারে। থিরুর খেত থেকে হলুদ কিনে এনে নতুন মোড়কে বেঁধে বিক্রি করেন তিনি

ব্যবসার অদম্য ইচ্ছে তাঁর বরাবরের, কিন্তু ২০২০ সালের মার্চে স্নাতক হওয়ার দোরগোড়ায় সারা দেশ জুড়ে নেমে আসে লকডাউন, একে একে বন্ধ হতে থাকে ভবিষ্যতের রাস্তা। আর ঠিক তখনই তাঁর আলাপ হয় সত্যমঙ্গলমের কাছে উপ্পুপাল্লাম জনপদ নিবাসী জৈব-চাষি থিরু মূর্তির সঙ্গে। গেরস্থালির ব্যবহারে লাগে এমনতর যন্ত্রপাতির একটি দোকান আছে অক্ষয়ার মা-বাবার, সেখানকার পুরোনো খদ্দের থিরু। "এককালে রেডিও-ক্যাসেটের একটা দোকান ছিল আপ্পার [বাবা], তখন থেকেই দুজনে বন্ধু," মনে করে বললেন তিনি।

থিরুকে 'কাকা' বলে ডাকেন অক্ষয়া। জৈব হলুদের একটি লাভজনক ব্যবসা আছে তাঁর, ফসলের সঙ্গে মূল্য সংযোজন করে সরাসরি তুলে দেন ক্রেতার হাতে। তাঁর থেকে হলুদ কিনে নতুন করে প্যাকেটজাত করে বেচবেন বলে ঠিক করলেন অক্ষয়া। অভয় দিয়ে থিরু জবাব বলেছিলেন: "এডুথু পান্নুঙ্গা" (জিনিসগুলো নাও, ব্যবসা শুরু করে দাও)। "কাকার মতো ইতিবাচক মানুষ খুব কমই হয়," ফিক করে হেসে উঠে জানালেন অক্ষয়া। এভাবেই জন্ম নেয় সুরুকুপাই ফুডস্।

নতুন কোম্পানির বলে বলীয়ান হয়ে জীবনের প্রথম প্রদর্শনীতে গিয়েও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারি ২০২১, মাদুরাইয়ে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় ট্যান ফুড '২১ এক্সপো। দুই হাজারেরও বেশি লোক এসে ভিড় জমিয়েছিল তাঁর স্টলে। তাঁদের প্রতিক্রিয়া এবং বাজার সম্বন্ধে গবেষণা করে একটা জিনিস বিচক্ষণে টের পেয়েছিলেন অক্ষয়া – ব্র্যান্ড এবং নজর কাড়া মোড়কের মূল্য অপরিসীম।

অক্ষয়ার কথায়: "খদ্দেরের সঙ্গে ব্যক্তিগত একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল আমার ব্র্যান্ডটার নামের। তাছাড়া অভিনবত্ব তো ছিলই। এর আগে হলুদ কেবল প্লাস্টিকের প্যাকেটেই বিক্রি হত। দড়ি-বাঁধা বটুয়ার ভিতর কাগজের মোড়ক, তার মধ্যে হলুদ, এমনটা আগে কক্ষনো দেখেনি কেউ!" সে ভোগ্যপণ্যের (এফএমসিজি) তাবড় তাবড় সব কোম্পানিই হোক, কিংবা জৈব-ফসলের কেতাদুরস্ত দোকান, তাঁর মতো এমন সহজ করে ভাবেনি আর কেউ। ভাবনাটা তাঁর নজর কাড়া তো বটেই, তবে থেমে থাকাটা ধাতে ছিল না অক্ষয়ার।

ব্যবসা বাড়ানোর জন্য অসংখ্য মানুষ তথা সংগঠনের থেকে উপদেশ নিতে থাকেন তিনি। এঁদের মধ্যে অক্ষয়ার গুরু ডঃ এম. নটচিমুথু এবং শানমুগা সুন্দরমও রয়েছেন, পোটান সুপার ফুডস্-এ কাজ করেন দুজনেই। ভারতের খাদ্য সুরক্ষা ও গুণমান কর্তৃত্ব বা এফএসএসএআই-য়ের শংসাপত্র এবং শিলমোহর পেতে তাঁকে সাহায্য করে মাদুরাইয়ের কৃষি বাণিজ্য উন্মেষক গোষ্ঠী (মাদুরাই অ্যাগ্রি বিজনেস ইনকিউবেশন্ ফোরাম বা এমএবিআইএফ)। আর হ্যাঁ, সময় পেলেই স্বনির্ভরতার উপর লেখা বইপত্র হাতে তুলে নেন অক্ষয়া। এগুলোর মধ্যে শেষ যেটা পড়েছেন, তার শিরোনাম হচ্ছে – Attitude is Everything বা ‘ মনোভাবই সব '

Akshaya's Surukupai Foods products on display in Akshaya Home Appliances, the store owned by her parents
PHOTO • M. Palani Kumar

অক্ষয়ার সুরুকুপাই ফুডস্-এর বিভিন্ন সামগ্রী সাজানো রয়েছে তাঁর মা-বাবার দোকানে, যার নাম অক্ষয়া হোম অ্যাপ্লাইয়েন্সেস্

সাফ কথায় জানালেন অক্ষয়া: "একটা ব্যবসা কেমনভাবে দাঁড় করাতে হয়, কেমন করে চালাতে হয়, এসব থোড়াই না বিবিএ পড়ে শিখেছি?" বর্তমান শিক্ষা-ব্যবস্থার প্রতি ভুরি ভুরি নালিশ আছে তাঁর। "ব্যাংকের খুঁটিনাটি তো ছেড়েই দিলাম, সাধারণ জিনিসগুলোই বা ওরা শেখায় না কেন শুনি? ব্যাংকে কেমন করে ঋণের জন্য আবেদন করতে হয়, এটা কি চাইলে বিবিএ কোর্সে শেখানো যায় না? বাস্তব জগতে কোথায় কী হয়, এ ব্যাপারে শিক্ষক, এমনকি কি বিভাগীয় প্রধানেরও কোন ধারণা নেই কেন?"

সুতরাং তিনি একাই নেমে পড়েছেন শূন্যস্থান পূরণে: "হাজারটা জিনিস বাকি আছে শেখার।"

এ ব্যাপারে ফলপ্রসূ হওয়ার জন্য একটা হালখাতা বানিয়ে ফেলেছেন অক্ষয়া, কী কী শেখা বা করা বাকি আছে সেসবের হিসেব থাকে সেখানে। সেগুলোর মধ্যে থেকে যেই না একটা কিছু করা হয়ে যায়, অমনি লাইন চালিয়ে ঘ্যাচাং করে দেন। "পুঁচকে একখান দিনলিপি বানিয়ে সব লিখে রাখি। দিনের শেষে যেগুলো 'ঘ্যাচাং' হচ্ছে না, সেগুলো আবার ফিরতি পথে পরের দিনের ভাগে উঠে যায়।" ঘ্যাচাংয়ের সংখ্যা যত কম হয় ততই তাঁর মন ভরে ওঠে "অনুশোচনা ও অপরাধবোধে", ক্রমশ ভারি হতে থাকে জেদের দাড়িপাল্লা।

এ হেন খাটাখাটনির ফলস্বরূপ তাঁর স্নাতকোত্তর স্তরের প্রথম তিনটে সেমেস্টারের খরচা উঠে গেছে। পড়াশোনার বিষয়টিও বেশ তাক লাগানোর মতো। "দূরত্ব শিক্ষার মাধ্যমে সমাজকর্মে মাস্টার্স করছি। একেকটা সেমেস্টারের মাইনে ১০,০০০ টাকা, তার সঙ্গে পরীক্ষার খরচ রয়েছে আরও হাজার পাঁচ। শুরুতে আপ্পার থেকে ৫‌,০০০ টাকা নিয়েছিলাম। বাকিটা আমার নিজের টাকা," তাঁর কণ্ঠে ফুটে উঠছিল চাপা গর্বের আভাস। ১০,০০০ টাকার পুঁজি দিয়ে শুরু করা তাঁর ব্যবসা অচিরেই মুখ দেখেছে ৪০,০০০ টাকার মুনাফার, মাইনের 'বাকিটা' উঠে এসেছে সেখান থেকেই।

খদ্দেররা মূলত পাইকারি দরেই মালপত্তর কেনেন। তাঁদের ইচ্ছামতন পসরা সাজিয়ে ফেলেছেন অক্ষয়া। সবচাইতে তাড়াতাড়ি যেটা বিক্রি হয় সেটা হল জৈব-হলুদ দিয়ে বানানো বিভিন্ন ধরনের জিনিসে ভরা একটা ডালা (হ্যাম্পার), বিয়েশাদিতে নিমন্ত্রণ জানাতে ব্যবহার করা হয় এটি। এমনতর জিনিস তাঁর আগে আর কেউ বিক্রি করেনি, এমনকি এখনও কেউ করে বলে তিনি জানেন না। "দাম রেখেছি ৫০ থেকে ১০০ টাকা। একেকটা ডালায় আছে একটা করে দড়ি-বাঁধা বটুয়া, হলুদ গুঁড়োর মোড়ক, পাঁচ গ্রাম করে বীজের (দেশজ প্রজাতির বেগুন, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, লঙ্কা এবং পালং শাক) প্যাকেট এবং 'ধন্যবাদ' লেখা একটা করে চিরকুট।"

অক্ষয়ার কথায়: "আত্মীয়স্বজন বা ইয়ার দোস্তের বাড়ি বিয়ের আমন্ত্রণ নিয়ে গেলে লোকে এই ডালাগুলো সঙ্গে রাখে। ব্যাপারটা একাধারে যেমন মাঙ্গলিক ও স্বাস্থ্যকর, তেমনই পরিবেশ-বান্ধবও বটে।" কিছু খদ্দের এমনও আছেন যাঁদের আরও শৌখিন হ্যাম্পার পছন্দ, ঢালাও টাকাকড়ি নিয়ে আসেন তাঁরা। তাঁদের জন্য সুন্দর কাঁচের বোতলে বেশি করে হলুদ গুঁড়ো ভরে দেন অক্ষয়া। আজ অবধি বেশ কয়েকটি বিয়েবাড়িতে এরকম শৌখিন ডালা সরবরাহ করেছেন তিনি, এবং লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ায় দিনকে দিন ভরে উঠছে বরাতের ঝুলি। "গেল বার ২০০টা ডালা বিক্রি হয়েছিল, একেকটার দাম ছিল ৪০০ টাকা।"

Left: Akshaya with a surukupai, or drawstring pouch, made of cotton cloth. Right: The Surukupai Foods product range
PHOTO • M. Palani Kumar
Left: Akshaya with a surukupai, or drawstring pouch, made of cotton cloth. Right: The Surukupai Foods product range
PHOTO • M. Palani Kumar

বাঁদিকে: সুতির কাপড়ে বানানো দড়ি-বাঁধা বটুয়া বা সুরুকুপাই হাতে দাঁড়িয়ে আছেন অক্ষয়া। ডানদিকে: সুরুকুপাই ফুডস্-এর বিবিধ সামগ্রী

সত্যমঙ্গলম থেকে ঘুরে আসার মাস কয়েক পর অক্ষয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম, হঠাৎই মাঝপথে "ব্যাংকের ম্যানেজার বাবু ফোন করছেন," বলে ফোনটা কেটে দিলেন। ঘণ্টাখানেক পর আবার ফোন, বুঝিয়ে বললেন যে ব্যাংক থেকে যাচাই করতে লোক এসেছিল। সরকারি একটা ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। যাবতীয় কাগজপত্র থেকে বাদবাকি পুরোটাই তিনি একাহাতে সামলেছিলেন, সুদের হার যেমন ৯ শতাংশ, তেমনই জামিন বাবদ কিছুই রাখতে হয়নি। ঋণের টাকায় ছোটখাটো একটা হলুদের কারখানা বানিয়েছেন, যেখানে সচ্ছতা বজায় রেখে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে হলুদ গুঁড়ো করে মোড়কে ভরা হবে। স্বপ্নের ডানায় চেপে সাত-তাড়াতাড়ি বড়ো হওয়ার শখ তাঁর।

"এক টন হলুদ গুঁড়োর বরাত পেয়েছি। নয়তো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাণিজ্যিক হলুদ কিনতাম না," বললেন তিনি। তবে এই জাতীয় যন্ত্রগুলো চালানো মুখের কথা নয় কিন্তু। "কলেজে পড়ার সময় বিজ্ঞাপন বানানো শিখেছি। এই ধরনের সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে সেন্সরগুলো কেমনভাবে কাজ করে, রোল পাকানো কাগজ কেমন করে ঢোকাতে হয়, সেগুলো টানটানই বা হয় কেমন করে, কিসুই জানি না তেমন। নিঁখুতভাবে না করলে পুরো ব্যাচটাই জলে চলে যাবে।"

কোথায় কোন কোন জিনিসে কেমন ভাবে গণ্ডগোল পাকাতে পারে, সেটার একটা তালিকা বানিয়ে দিলেন অক্ষয়া, তবে ঝুঁকি নেওয়াটা যে সার্থক সেটাও বলতে ছাড়লেন না। জনা দুই অস্থায়ী সহায়ক রেখেছেন মেশিনটা চালাতে, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস যে অচিরেই মাস গেলে ২ লাখ টাকার মুনাফা হবে। অর্থাৎ কলেজে পড়াকালীন যাঁরা যাঁরা সাহায্য করেছেন তাঁকে, তাঁদের সব্বার থেকে অনেকটাই বেশি।

এতকিছু সত্ত্বেও অক্ষয়া কিন্তু ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য খেটে মরছেন না। কৃষিভিত্তিক ব্যবসার এই যে যুগ যুগান্তরের হাওয়াই মহল, যেখানে উপরের তলায় পাকাপাকি ভাবে ঘর ফেঁদেছে পুরুষ-শাসিত কর্পোরেট, দিনান্ত ঘাম ঝরিয়ে সেটাকেই হেঁটমুণ্ডু করতে উদ্যত তিনি।

"হলুদের কারখানাগুলো আক্ষরিক অর্থেই স্থানীয় স্তরে কাজ করছে, ফসল ফলানো মাঠের এক্কেবারে গা-ঘেঁষে, এই খবরটা যে একাই একশো," জানালেন কৃষি জননীর (কঙ্গায়ম-কেন্দ্রিক এই সামাজিক প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক তথা স্বয়ম্ভূ কৃষি-পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে) প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও উষা দেবী ভেঙ্কটচলম। "আরেকটা কথা, কৃষি-ভিত্তিক কোম্পানির কর্ণধার হিসেবে এমন অল্পবয়সী মেয়েদের দেখা যায় না সচরাচর। ফসল তোলার পর নারীর যে ভূমিকা, সেটা ধীরে ধীরে যান্ত্রিকীকরণ আর কেন্দ্রীকরণের দোহাই দিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।"

উষা দেবীর মতে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে জড়িত হাজারটা সমস্যার মধ্যে একটি হল: "বেলাগাম কেন্দ্রীকরণ আর বকচ্ছপ মার্কা সব সিদ্ধান্ত, যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাষ হওয়া আপেল ভারতে খাওয়া হয় বটে, তবে মাঝখানে সেটা একবার পালিশ হওয়ার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরতে যায়। অতিমারি কাটানো এই দুনিয়ায় পক্ষে এমনটা বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব। আর এই যে মাঠের ফসল এ দেশ থেকে সে দেশ ঘুরপাক খেয়ে মরছে, জলবায়ু দূষণের পক্ষে এটা যে কতটা মারাত্মক সেটা খতিয়ে না দেখলে বুঝতেই পারবেন না অবস্থাটা কতখানি ভয়াবহ।" বিদ্যুৎ আর জ্বালানি অপচয়ের দিকেই আঙুল তুলছিলেন তিনি।

The biodegradable sachets in which Akshaya sells turmeric under her Surukupai Foods brand. She says she learnt the importance of branding and packaging early in her entrepreneurial journey
PHOTO • Akshaya Krishnamoorthi
The biodegradable sachets in which Akshaya sells turmeric under her Surukupai Foods brand. She says she learnt the importance of branding and packaging early in her entrepreneurial journey
PHOTO • Akshaya Krishnamoorthi
The biodegradable sachets in which Akshaya sells turmeric under her Surukupai Foods brand. She says she learnt the importance of branding and packaging early in her entrepreneurial journey
PHOTO • Akshaya Krishnamoorthi

তাঁর সুরুকুপাই ফুডস্ শিরোনামে যে পরিবেশ-বান্ধব পচনশীল মোড়কে (বায়োডিগ্রেডেবল) ভরে হলুদ বিক্রি করেন অক্ষয়া। তিনি জানালেন, ব্র্যান্ডিং এবং ঠিকমতো প্যাকেটজাত করার গুরুত্ব যে ঠিক কতখানি, এটা ব্যবসা-জীবনের গোড়াতেই বুঝে গেছেন

অপার দূরদর্শিতা থাকা সত্ত্বেও অত কিছু এখনই ভেবে উঠতে পারেননি অক্ষয়া। তবে হ্যাঁ, প্রত্যুৎপন্নমতিত্বর সঙ্গে এই যে তিনি হলুদের চকলেট এবং হলুদের পাঁপড় বানানোর সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন, এটার জন্য প্রথাগত বাজার-ব্যবস্থা নড়েচড়ে বসবেই। আপাতত এটা স্থানীয়ভাবে হলেও, আগামী দিনে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আঁটঘাট বেঁধে তৈরি তিনি।

এমনতর সামগ্রী কি আদৌ জনপ্রিয় হবে, নাকি কিয়দাংশ মানুষের মধ্যেই আটকে থেকে যাবে? এ কথা জিজ্ঞেস করাতে অক্ষয়া জানালেন: "মনে তো হয় মানুষ কিনবে এসব। পেপসি আর কোকাকোলা তো সবাই খায়, কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে নান্নারি শরবত বা পনীর সোডার চাহিদাও রয়েছে। ঠিক তেমনই আমার হলুদের সামগ্রীগুলোও লোকে কিনবে, এগুলো তো স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো," আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ছিল তাঁর গলার স্বরে।

২০২৫ নাগাদ গ্রামীণ বাজারে আসন্ন বাড়বাড়ন্তের জন্য মুখিয়ে আছেন অনেকেই, সেটাই লুফে নেওয়ার আশা রাখেন অক্ষয়া। "তবে সেটার জন্য সস্তার সামগ্রী বানাতে হবে, এবং অল্প পরিমাণে। জৈব হলুদের প্যাকেটগুলো বেশি বড়ো করে ফেললেই দামটা আকাশছোঁয়া হয়ে যায় – ২৫০ গ্রাম ১৬৫ টাকা। ওই জন্যই তো মাথা খাটিয়ে ছোটো ছোটো প্যাকেট বার করেছি, একবার ব্যবহার করলেই ফুরিয়ে যায় যাতে।"

অক্ষয়ার মা-বাবার দোকানে সারি সারি তাকে সুরুকুপাইয়ের প্যাকেট সাজানো রয়েছে। তার মধ্যে থেকে একখানা খুলে ১২টা মোড়ক বার করে দেখালেন তিনি, একেকটায় ৬ গ্রাম করে মুখে মাখার হলুদ রয়েছে। "খদ্দেররা চাইলে পুরোটাই কিনতে পারেন ১২০ টাকা দিয়ে, কিংবা একটা করে মোড়কও বেচি আমি, দাম ১০ টাকা।" বড়ো প্যাকেটটা খসখসে সুতির কাপড় দিয়ে বানানো। ভিতরের ছোট ছোট মোড়কগুলি পচনশীল, আর্দ্রতা বজায় রাখতে কাগজের সঙ্গে প্লাস্টিকের পাতলা স্তর জুড়ে তৈরি এগুলি।

বানানোর কায়দা ও কৌশল দুটোই থিরু মূর্তির। সাদা অক্ষরে লেখাগুলো যদিও অক্ষয়ার নিজের। এভাবে বানানোর সুবিধা আছে বেশ কিছু। "নষ্ট কম হয়, আর্দ্রতা বজায় থাকে। আর দাম যেহেতু মোটে ১০ টাকা, তাই খদ্দেরও কিনতে আগ্রহী হয়," একনাগাড়ে বলে যাচ্ছিলেন তিনি, "আমার দম কক্ষনো ফুরোয় না," বলেই হেসে উঠলেন ফিক করে।

মা-বাবার সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। গেরস্থালির ব্যবহারে লাগে এমনসব যন্ত্রপাতির দু-দুটো মাঝারি মাপের দোকান আছে তাঁদের, প্রাথমিক স্তরে নিজস্ব সামগ্রী বিক্রিবাটার জন্য সেগুলি কাজে লাগিয়েছেন অক্ষয়া। সেই যেদিন ঠিক করেছিলেন ব্যবসায় নামার, সেদিন থেকে আজ অবধি তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি সিদ্ধান্তের পিছনে মা-বাবার অটুট সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

“I always have energy,” she says, laughing
PHOTO • M. Palani Kumar

'আমার দম কক্ষনো ফুরোয় না,' হাসতে হাসতে জানালেন অক্ষয়া

বছর দুই আগে গৃহদেবতার সামনে চুল কেটে ন্যাড়া হয়েছিলেন অক্ষয়া। আশেপাশের অনেকেই দু-চারটে কথা শোনায় বটে, কিন্তু ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর মা-বাবা। তাঁদের মেয়ে যে অনন্য সুন্দরী, গলা চড়িয়ে এ কথা বলেছিলেন তাঁরা। "হামেশাই অসুস্থ হয়ে পড়তাম, তাই ঠিক করি যে ন্যাড়া হব। ক্যান্সারে আক্রান্তদের জন্য চুলগুলো দান করব ভেবেছিলাম, কিন্তু তখন সেটা করে উঠতে পারিনি। চুলগুলো ছেঁটে ফেলে সে যে কি বিশাল পরিমাণে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম তা ঠিক বলে বোঝাতে পারব না," বলে উঠলেন তিনি, "আমার পরিচয়টা যে চুল দিয়ে বাঁধা নয়, এ কথা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম। এতকিছুর পরেও আমার বাবা-মা যে আমায় সেই আগের মতোই ভালোবাসে, এটাই পরম প্রাপ্তি।"

আজও তাঁরা মেয়ের স্বপ্ন সাকার করার জন্য প্রাণপাত করে যাচ্ছেন। অক্ষয়ার সঙ্গে কলেজে আরও যে ৬০ জন মেয়ে পড়ত, তাদের প্রায় সবারই বিয়েথা হয়ে গেছে। "লকডাউনের জন্যই তো। ধরে ধরে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিল সবাই। গুটিকয় চাকরি করে বটে, কিন্তু আমি ছাড়া আর কেউই ব্যবসায় নামেনি।"

তবে অক্ষয়ার এ হেন সাফল্যের ফলে ছবিটা যে বদলাতে পারে, এ কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন উষা দেবী ভেঙ্কটচলম। "এই যে এমন অল্পবয়সী একখানা মেয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের কথা মাথায় রেখে একাহাতে স্থানীয় ভাবে কারখানা চালু করল, এটা কি মুখের কথা?" দৃঢ়ভাবে বলে উঠলেন তিনি, "অসম্ভব প্রেরণাদায়ক ওর এই সাহসিকতা, এর থেকে অন্যরা, বিশেষ করে ওর বয়সী ছেলেমেয়েরা নতুন ভাবে চিন্তা করার রাস্তা খুঁজে পাবে।"

আপাতত জীবনের পরের ধাপ হিসেবে এমবিএ ডিগ্রিটাই বেছে নিয়েছেন অক্ষয়া। "অধিকাংশ লোক ব্যবসা-ট্যাবসায় নামার আগে মাস্টার্সটা করে নেয়, আমি উল্টোটা করছি।" এমন করলে আদতে লাভবান হবেন বলেই মনে করেন তিনি। নিজের শহরে থেকেই একটা একটা করে পা ফেলে ব্রান্ডটা পাকাপোক্ত করে তুলতে উদ্যত অক্ষয়া। নিজের একটা ওয়েবসাইট তো আছেই, এছাড়াও ইনস্টাগ্রাম এবং লিংকডইন ব্যবহার করেন তিনি, সেখানে বিভিন্ন হ্যাশটাগ (আরও বেশ কিছু শব্দের পাশাপাশি #টারমারিকল্যাটে শব্দটাও কর্পোরেটের মুঠো থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি) সহযোগে হরেক রকমের সামগ্রী বানানোর কায়দা পোস্ট করতে থাকেন। কৃষক ও উৎপাদক সংগঠন (এফপিও) এবং যারা যারা রপ্তানি করে, তাদের সবার সঙ্গে যোগাযোগে ইচ্ছুক তিনি। তাঁর বক্তব্য: "আমার মতো মানুষ বিক্রিবাটার দ্বায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিলে খেতের কাজে মন লাগাতে পারবেন চাষিরা।" অর্থাৎ খেত, বাজার এবং গেরস্থালির মাঝে কোত্থাও কোনও ফাঁকফোঁকর থাকবে না আর।

"মোদ্দা কথা হল গল্প বলটে পারার মুন্সিয়ানা," অক্ষয়ার প্রত্যয়ী বক্তব্য, "ধরে নিন দুটো পয়সা বাঁচাবে বলে খদ্দের এই বটুয়াগুলো ঘরে রেখে দিল, তখন চট করে সে কি আর আমার ব্র্যান্ডের নামটা ভুলতে পারবে? উল্টে আবার সেই আমার থেকেই হলুদ কিনে নিয়ে যাবে।" এইভাবেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে তামিলনাড়ুর হলুদ...

২০২০ সালের রিসার্চ ফান্ডিং কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গবেষণামূলক এই প্রতিবেদনটি রূপায়িত করতে আর্থিক অনুদান জুগিয়েছে বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজী বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রচ্ছদ চিত্র: এম. পালানি কুমার

অনুবাদ: জশুয়া বোধিনেত্র (শুভঙ্কর দাস)

Aparna Karthikeyan

ଅପର୍ଣ୍ଣା କାର୍ତ୍ତିକେୟନ ହେଉଛନ୍ତି ଜଣେ ସ୍ୱାଧୀନ ସାମ୍ବାଦିକା, ଲେଖିକା ଓ ପରୀର ବରିଷ୍ଠ ଫେଲୋ । ତାଙ୍କର ତଥ୍ୟ ଭିତ୍ତିକ ପୁସ୍ତକ ‘ନାଇନ୍‌ ରୁପିଜ୍‌ ଏ ଆୱାର୍‌’ରେ ସେ କ୍ରମଶଃ ଲୋପ ପାଇଯାଉଥିବା ଜୀବିକା ବିଷୟରେ ବର୍ଣ୍ଣନା କରିଛନ୍ତି । ସେ ପିଲାମାନଙ୍କ ପାଇଁ ପାଞ୍ଚଟି ପୁସ୍ତକ ରଚନା କରିଛନ୍ତି । ଅପର୍ଣ୍ଣା ତାଙ୍କର ପରିବାର ଓ କୁକୁରମାନଙ୍କ ସହିତ ଚେନ୍ନାଇରେ ବାସ କରନ୍ତି ।

ଏହାଙ୍କ ଲିଖିତ ଅନ୍ୟ ବିଷୟଗୁଡିକ ଅପର୍ଣ୍ଣା କାର୍ତ୍ତିକେୟନ୍
Translator : Joshua Bodhinetra

ପିପୁଲ୍ସ ଆର୍କାଇଭ୍ ଅଫ୍ ରୁରାଲ ଇଣ୍ଡିଆ (ପରୀ) ରେ ଭାରତୀୟ ଭାଷା କାର୍ଯ୍ୟକ୍ରମ, ପରୀଭାଷାର ବିଷୟବସ୍ତୁ ପରିଚାଳକ ଜୋଶୁଆ ବୋଧିନେତ୍ର। ସେ କୋଲକାତାର ଯାଦବପୁର ବିଶ୍ୱବିଦ୍ୟାଳୟରୁ ତୁଳନାତ୍ମକ ସାହିତ୍ୟରେ ଏମଫିଲ କରିଛନ୍ତି ଏବଂ ଜଣେ ବହୁଭାଷୀ କବି, ଅନୁବାଦକ, କଳା ସମାଲୋଚକ ଏବଂ ସାମାଜିକ କର୍ମୀ ଅଟନ୍ତି।

ଏହାଙ୍କ ଲିଖିତ ଅନ୍ୟ ବିଷୟଗୁଡିକ Joshua Bodhinetra