কৃষক সমাবেশের প্রস্তুতি মুম্বইয়ে

দেবেন্দ ্র সিং য়ে র পরিবার উত্তরপ্রদেশে তাঁদের গ্রামে তিন বিঘা জমি তে চাষ ের কাজ করে। দেবেন্দ্র নিজে মুম্বই শহরে দিনমজুরি করেন যাতে দরকার মত ো বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারেন

এখানে শ্রমিকদের তাঁবু তৈরির কাজ শেষ হলে, হাজারে হাজারে কৃষক আজাদ ময়দানে আসতে শুরু করবেন। এই কৃষকদের মধ্যে অনেকেই তাঁদের যাত্রা শুরু করেছেন ১৮০ কিলোমিটার দূরের নাসিক থেকে, ২৩শে জানুয়ারির প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়ে

ময়দানে প্যান্ডেলের জন্যে বাঁশের এই ভারা প্রায় ১৮ - ২০ ফুট উঁচু করে বাঁধা হয়েছে। তাঁবু সময় মতো তৈরি করার জন্যে গত দুইদিন ধরে এই শ্রমিকেরা কোনোরকম সুরক্ষা সরঞ্জাম না নিয়েই ক্রমাগত বাঁশ বেয়ে ওঠানামা করছেন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯টা অবধি টানা

সন্ধেবেলায় সূর্য অস্ত গেলে , দেবেন্দ্র আর ১৯ বছরের শঙ্কর চৌহান একটি স্ট্রোব লাইটের আলোয় কাজ চালিয়ে গেছেন , আধা - অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে খুঁটিয়ে দেখেছেন বাঁশের বাঁধনগুলো সব একই লেভেলে রয়েছে কিনা

‘ যা কাজ পাই তাই করি ,’ বলল ব্রিজেশ কুমার , কাজের মধ্যে আছে দেওয়াল রং করা , মিস্তিরির কাজ , আরও অন্যান্য কাজও

প্রায় ৩০০০ বাঁশ , ৪০০০ মিটার কাপড় ও অসংখ্য দড়ির বান্ডিল লেগেছে এই প্যান্ডেল বাঁধার কাজে

‘ আমাদের আগে যারা এসেছে তারা জানত কি করতে হবে ,’ বললেন ব্রিজেশ ( মাঝখানে ), তার বাঁ পাশে মহেন্দ্র সিং ও ডানদিকে রূপেন্দ্র কুমার সিং। ‘ আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করে শিখে নিই - কি করে বাঁধতে হয় , কি করে বাঁশ বেয়ে উঠতে হয়। নতুন কেউ যখন গ্রাম থেকে আসে , আমরা তাকেও সঙ্গে নিয়ে নিই , সেও শিখে যায় ’

‘ নতুন লোক এলে প্রথমে আমরা তাকে বাঁশ তোলার কাজ দিই , তারপরে নিচের বাঁশগুলো বাঁধতে শেখানো হয়। তারপরে তো ভারায় ওঠা ,’ জানান দেবেন্দ্র

প্যান্ডেলের কাজ শেষ হলেও ২৪শে জানুয়ারি আজাদ ময়দানের এই সমাবেশে যোগ দিতে কিছু শ্রমিক থেকে যাবেন। এদের মধ্যে অনেক শ্রমিক উত্তর মুম্বইয়ে তাঁদের ভাড়া বাড়িতে ফিরে যাবেন

‘আমরা এখানে মজুর না খাটলে আমরা আমদের দেশের জমিতে চাষ করতেই পারব না। শস্যের জন্যে বীজ, সার, এইসব কিনতে ভালোই পয়সা লাগে। শুধু চাষ করে সেই টাকার ব্যবস্থা হয় না,’ বললেন রাম মোহন (নিচে)

‘আমি খুব বেশি কিছু জানিনা এই কৃষি আইনের ব্যাপারে। কাজ করি, পয়সা পাই। এইটুকুই বুঝি,’ বললেন গোন্ডা জেলার থেকে আসা ২৬ বছরের সন্তরামন (মাস্ক পরিহিত)

‘এখানে কাজ সেরে আরেক জায়গায় যেতে হবে কাজের জন্যে। অনেকেই প্রতিবাদে যোগ দেবে দেখছি। কিন্তু কাজ না করলে আমরা খাব কি?’