আচ্ছা, মা কোন ভাষায় স্বপ্ন দেখেন? গঙ্গা থেকে পেরিয়ার - নদীর তীরে তীরে মায়েরা ঠিক কোন ভাষায় কথা বলেন সন্তানের সঙ্গে? প্রতিটি রাজ্য, প্রতিটা জেলা, এই গাঁ থেকে সেই গাঁয়ে তাঁর ভাষা বুঝি নিজের রং বদলায়? হাজার হাজার ভাষা, লাখ লাখ বুলি, মায়েরা বুঝি সবকটাই জানেন? বিদর্ভের চাষি, হাথরাসের বাচ্চাকাচ্চা, দিন্দিগুলের মেয়ে — মায়েরা ঠিক কোন ভাষায় কথা বলেন? শুনুন! কানদুটো চেপে ধরুন লালচে বালির দেহে। বাতাস যেথা অধর ছুঁয়ে যায়, সেই পর্বতশৃঙ্গে উঠে শুনুন। মায়ের স্বর, মায়ের গল্প, মায়ের গান, মায়ের হাহাকার — শুনতে পাচ্ছেন? এবার বলুন তো, ভাষাটা ঠাহর করা গেল? আমি কিন্তু শুনতে পাচ্ছি, মা বড্ড চেনা একখান ঘুমপাড়ানি গান গাইছেন — শুনতে পাচ্ছেন?
জিভ
একখানি ছুরি ফুঁড়িতেছে জিভ!
ক্ষুরধার ফলা তার —
ছিন্নভিন্ন পেশির পরশে
কথা হয় ছারখার।
শব্দবন্ধ, গল্প, গীতিকা,
যা কিছু জানা-অজানা —
ছিনিয়াছে বুলি, ঠাকুমার ঝুলি,
ছুরি তার পরোয়ানা।
দগদগে জিভে রক্তের ধারা
মুখ থেকে নামে বুকে —
নাইকুণ্ডলি, যৌনাঙ্গ ও
শ্যামল দ্রাবিড় সুখে।
জিহ্বার মতো টকটকে মাটি
স্যাঁৎস্যাঁতে কালো ক্ষত —
ফোঁটার জঠরে জন্মেছে ফোঁটা
সিঁদুরে ঘাসের মতো।
শত শত জিভ ধরার কোঠরে,
সহস্র লাখে লাখে —
মরে যাওয়া কিছু জিহ্বা উদিছে
কবরের পিছুডাকে।
ভুলে যাওয়া জিভে মায়ের গন্ধ,
ঘুমপাড়ানির গান —
বাসন্তী কিছু জিহ্বা ফুটেছে,
ফুলে ফুলে অভিমান।
ভোঁতা ছুরি দিয়ে ফুঁড়িয়াছ জিভ,
কাঁপা কাঁপা দুটি ধার —
জিহ্বার দেশে জিহ্বার গানে
ভয়ে ভয়ে একাকার।
অনুবাদ: জশুয়া বোধিনেত্র (শুভঙ্কর দাস)