বাজেটের ব্যাপারে তেমন মাথা ঘামান না সৈয়দ খুরশিদ। "খবরের চ্যানেল-ট্যানেল দেখার চেষ্টাও করি না আমি," বাহাত্তুরে মানুষটা নিশ্চিন্ত কণ্ঠে জানালেন। "এদের কতটা যে সত্যি আর কতটা যে ভেক ধরা ঢাক পিটোনো, কে জানে!"
সাম্প্রতিক বাজেটে আয়কর স্ল্যাবে রদবদলের ব্যাপারটা অবশ্য জানা আছে তাঁর, কথাপ্রসঙ্গে কেউ একবার বলেছিল বটে। "কিন্তু আমার মহল্লায় একটা লোকেরও এতে কিছু ফায়দা হয়েছে বলে তো শুনিনি বাবা,"হেসে ফেলেন তিনি। "হাম আপনা কামাতে হ্যায় অউর খাতে হ্যায় [রুটিরুজির জন্যই তো খাটি ]।"
মহারাষ্ট্রের পারভানি জেলায় গঙ্গাখেড় গঞ্জে গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় যাবৎ দর্জির কাজ করছেন সৈয়দ। আব্বার থেকে এ বিদ্যে যখন শিখেছিলেন তখন বছর আটেক বয়স তাঁর। তবে, আগের মতো আর তেমন লাভ নেই এ ব্যবসায়। "উঠতি প্রজন্মের তো এখন রেডিমেড জামাকাপড়ের দিকেই বেশি ঝোঁক," ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলেন তিনি।
![](/media/images/02a-IMG20250203145616-PMN-Workers_like_us_.max-1400x1120.jpg)
![](/media/images/02b-IMG20250203145628-PMN-Workers_like_us_.max-1400x1120.jpg)
চার ছেলে আর দুই মেয়ে - এই ছয় সন্তানের মধ্যে মোটে এক ছেলে তাঁর সঙ্গে দর্জি দোকান সামলায়, বাকিরা স্থানীয় ঠিকে কাজে লেগে পড়েছে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, তাঁরা এখন গৃহিণী হিসেবে বাড়ির কাজের দায়দায়িত্ব সামালান
এক ঘরের দোকানটায় বসে খেটেখুটে, তাঁর জন্য কাজ করা দুজন কর্মচারির মাইনে মিটিয়ে, মাসে ২০,০০০ টাকা হাতে থাকে সৈয়দের। "ভাগ্যিস আব্বা এই দোকানটা কিনেছিল, তাই ভাড়া গুণতে হয় না অন্তত। নইলে এটুকু রোজগারও হত না।" একখান কাপড়ে নিখুঁত ভাবে সেলাই করতে করতে তার দিক থেকে চোখ না সরিয়েই আরেকটু যোগ করেন সৈয়দ,"বেশি দূর লেখাপড়া করিনি তো, ভালো করে পড়তে পারি না।"
সরকার তো বলে বেড়াচ্ছে প্রধানত কম-উপায়ী রোজগেরেদের কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট বানানো, "কিন্তু শেষমেশ তো দেখা গেল একটা নির্দিষ্ট শ্রেণির লোকেদেরই মুনাফার ফিকির আছে এতে," অকপটে বলেন সৈয়দ। "আমাদের মতো মজুরদের বরাতে আর কী বা জোটে।"
অনুবাদ: রম্যাণি ব্যানার্জী