“এই জঙ্গলে যে কত প্রজন্ম কেটেছে, তার ঠিকঠিকানা নেই,” জানালেন মাস্তু (শুধু এই নামটাই ব্যবহার করেন তিনি)। বন-গুজ্জর সম্প্রদায়ের এই রাখালিয়া মানুষটি আপাতত সাহারানপুর জেলার বেহাত গাঁয়ের শাকুম্ভারি অরণ্যের কাছে ডেরা বেঁধেছেন।
বন-গুজ্জররা একটি বৃহত্তর যাযাবর পশুপালক সমাজের অংশ, উত্তর ভারতের সমতল ভূমি ও হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে মরসুমি পরিযানে কাটে তাঁদের জীবন। সদলবলে উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ সীমান্তের শিবালিক পর্বতমালা পেরোচ্ছেন মাস্তু — গন্তব্য উত্তরকাশী জেলার বুগিয়াল। শীত পড়লে আবার শিবালিকে ফিরে আসবেন তাঁরা।
অরণ্যবাসী মানুষ এবং যাঁদের জীবন-জীবিকার একমাত্র ভরসা বনজঙ্গল — তাঁদের দুজনকেই নিরাপত্তা দেয় অরণ্য অধিকার আইন (এফআরএ) ২০০৬ । এসকল সম্প্রদায়, তথা অরণ্যজাত রসদের উপর যে যে প্রথাগত বনবাসী জাতির রুজিরুটি নির্ভরশীল — তাঁদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় এই আইন। তা সত্ত্বেও আইনের চোখে যে অধিকার তাঁদের প্রাপ্য, মোটের উপর সেগুলি আজ অধরাই থেকে গেছে বন-গুজ্জরদের।
জলবায়ু সংকটের প্রভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে অরণ্যের দুরবস্থা। হিমালয়ের আদিবাসী ক্রিয়াকলাপ প্রচার সমাজের সহ-পরিচালক মুনেশ শর্মার কথায়: “পর্বতের জৈবতন্ত্র বদলে যাচ্ছে, যার ফলে অখাদ্য গাছপালা বংশবৃদ্ধি করছে এবং দিনকে দিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে চারণভূমি।”
“বনজঙ্গল যখন ফুরিয়ে যাবে, পশুপ্রাণী পালন করব কীভাবে বলতে পারেন?” সওয়াল ছুঁড়লেন সাহান বিবি। ছেলে গুলাম নবির সঙ্গে তিনিও উত্তরাখণ্ডে চলেছেন মাস্তুদের সঙ্গে।
মাস্তু ও সাহান বিবির এই রাখালিয়া দল এবং প্রতিবছর দেশান্তরে বেরোলে তাঁদের যে সব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেসব ঘিরেই নির্মিত এই ফিল্মটি।
অনুবাদ: জশুয়া বোধিনেত্র