ভবঘুরে নই, আমি শ্রমিক শ্রমিক!
খিদের চেয়েও দামি,
বেহায়া মজুর আমি,
লালচে রাতের দেশে দুমুঠো মানুষ আমি,
নই অসহায়...
আমি জনম সহায়...
তোর অট্টালিকায়
রাখা রঙবেরঙের ঠোঁটে আঁটকুড়ি আয়না —
বস্তি জ্বালানো চোখে গরিবের বায়না —
এ দেশ এ দাস্তানে
এঁটো পরিসংখ্যানে
মেট্রোরেলের চাকা, সড়কে বা ময়দানে,
রক্ত রক্ত রাখি সিরাজ আমার।
মাভৈঃ মাভৈঃ এতে আছে কী বলার?
জলছড়া ছায়াপথে বেচি আমি সব্জি,
ইস্পাতে সিঁধ কাটে আগুনের কব্জি,
ফুটপাতে বেচি মোমো
ফুলকি শরীর ঘেমো,
মেঘে ঢাকা জঞ্জালে
জাতকের নাম।
তাথই তাথই বেনো শরীরের দাম।
বেচছি কপাল আমি আজও এ বসন্তে,
গরিবের জল কাটে চাঁদের হসন্তে,
দেখেছ আমায় জানি
আধুলি বা আঁশটানি,
শরীর শরীর সে তো সাত'রাজা শয়তানি,
চিনেছ আমায় বুড়ো ফিনকি বেলায়...
ইতি পথকে চলায়...
যত আলোনা খিদায়...
পোড়া ধুনকি শিরায়...
কোন গন্ধকুড়ানি মাঠে ঘুনসি মেলায়...
কথা রেখে না রাখায়...
গেঁয়ো তৃষ্ণচূড়ায়...
তুমি মেরেছো হাজার লাথি,
ল্যাংটা রাজার ছাতি
জঠরে নজরকাঠি জ্বেলেছে নহন্যে...
অসুখের জন্যে,
অসুখের জন্যে।
দয়া দয়া দুর্দিনে, খুচরো কফিন কিনে
এসেছ খোদার বেশে
ছুটিও দিয়েছ শেষে,
দাওনি শুধু যে গাঁয়ে ফিরিবার রাস্তা...
ছিনিয়ে নিয়েছ বাস —
লাইনে সাজানো লাশ —
চাঁড়ালির পেট কেটে দেবতার নাস্তা,
চাঁড়ালীর পেট কেটে দেবতার নাস্তা।
কুনকি ফুলের ঘায়ে
মূর্চ্ছা যাওয়ার দায়ে
দেখেছ আঙার পায়ে লাল বুনো পিঁপড়া —
সারি সারি রাজপথে,
দুলকি খিদার রথে,
তোমার করুণা ঘেরা হ্যাংলা ইরম্মতে
বেঁধেছি চাঁদের গায়ে
তেলচিটে চামড়া —
চলেছি ওই যে গাঁয়ে চাঁদখেকো আমরা।
দুমুঠো মানুষ আমি,
লালচে ঘুমের দেশে কালচে মজুর আমি
এয়োতি হাওয়ার...
আমি ফিরিব আবার...
তোর অট্টালিকার
গানে শস্তা ক্লোরিনে ভেজা লেনিনের মন্ত্র,
বিলিতি বুলেট ট্রেনে কার ষড়যন্ত্র?
নোনা ধরা হেঁয়ালের,
আধপেটা দেওয়ালের,
খ্যাপাটে পলেস্তারা, হাতুড়ি ও সুরকি,
তাতে রাজা তোর কী?
তাতে রাজা তোর কী??
অডিও: সুধন্য দেশপাণ্ডে জন নাট্য মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ও পরিচালক, সেই সঙ্গে তিনি লেফ্টওয়ার্ড বুকস্-এর একজন সম্পাদকও।
অনুবাদ: জশুয়া বোধিনেত্র (শুভঙ্কর দাস)