যন্ত্রের মতো হাত চলছে মহম্মদ আসগরের, কথা বলে চললেও হাত থামেনি এক মুহূর্তের জন্যেও।
“কুছ পল কে লিয়ে ভি হাত রুক গয়া তো কাম খারাব হো জায়েগা [কয়েক মুহূর্তের জন্যেও যদি হাত থামে তো কাজ নষ্ট হয়ে যাবে],” বলছেন তিনশো বছরের পুরনো এই হস্তশিল্পের ৪০ বছর বয়সি কারিগর।
আসগর ভাই ছাপা কারিগর, গত এক দশক ধরে এই কাজ করছেন তিনি। কিন্তু অন্য ছাপা কারিগরদের মতো কাঠের ব্লকে রং লাগিয়ে কাপড়ে ছাপ দেন না তিনি, তাঁর বিশেষত্ব হল পাতলা অ্যালুমিনিয়ামের পাত দিয়ে কাপড়ের উপর ধাতব ফুল এবং অন্যান্য নকশা তোলা।
অ্যালুমিনিয়ামের এই ক্ষীণ পাতটির প্রচলিত নাম তবক, শাড়ি, শারারা, লেহেঙ্গা ইত্যাদি মেয়েদের নানান পরিধেয়কে ঝলমলে করে তুলতে ব্যবহৃত হয়। তাঁর মাথার পিছনের তাকে সার দিয়ে সাজানো নানা আকারের সূক্ষ্ম নকশা-তোলা কাঠের ছাঁচ যা দিয়ে সাধারণ কাপড়জামায় উৎসবের আমেজ এনে দেন তিনি।
![Mohammad Asghar (left) is a chhapa craftsman during the wedding season. The rest of the year, when demand shrinks, he works at construction sites. He uses wooden moulds (right) to make attractive designs on clothes that are worn on festive occasions, mostly weddings of Muslims in Bihar's Magadh region](/media/images/02a-DSC01656-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
![Mohammad Asghar (left) is a chhapa craftsman during the wedding season. The rest of the year, when demand shrinks, he works at construction sites. He uses wooden moulds (right) to make attractive designs on clothes that are worn on festive occasions, mostly weddings of Muslims in Bihar's Magadh region](/media/images/02b-DSC01680-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
বিয়ের মরসুমে ছাপা কারিগরের কাজ করেন মহম্মদ আসগর (বাঁদিকে)। বছরের বাকি সময়ে যখন চাহিদা পড়ে যায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। (বাঁদিকে) কাঠের ছাঁচ দিয়ে নানা উৎসব-পার্বণে পরার জামায় সুন্দর সুন্দর নকশা তোলেন তিনি; মূলত বিহারের মগধ অঞ্চলে মুসলিমদের বিয়ের অনুষ্ঠানে পরা হয় এইসব জামা
বিহারের নালন্দা জেলার বিহারশরিফ গঞ্জ-শহরে আধ ডজন মতো ছাপা প্রিন্টিংয়ের দোকান আছে। খরিদ্দার মূলত মুসলিম, আর কারিগরেরাও – বেশিরভাগই রংরেজ জাতের অন্তর্ভুক্ত, যা বিহারে আর্থিকভাবে অনগ্রসর বর্গের তালিকাভুক্ত। বিহার সরকারের সাম্প্রতিক জাতিভিত্তিক সমীক্ষা অনুসারে বর্তমানে তাঁদের আনুমানিক সংখ্যা ৪৩,৩৪৭।
“তিরিশ বছর আগে আমার হাতে আর কোনও কাজ ছিল না, তাই এই কাজ ধরেছিলাম,” জানাচ্ছেন পাপ্পুজী। “আমার দাদু, মানে মায়ের বাবা, ছাপার কাজ করতেন। তাঁর থেকেই উত্তরাধিকারে পেয়েছি। তাঁর সময় কেটে গেছিল, আমারও সময় কেটে যাচ্ছে,” বলছেন ৫৫ বছর বয়সি পাপ্পুজী। বিহারের রাজধানী পাটনার সদাব্যস্ত ও ঘনবসতিপূর্ণ সবজিবাগ এলাকায় গত ৩০ বছর ধরে ছাপার দোকান চালাচ্ছেন তিনি।
জানালেন, এই কারিগরির চাহিদা ক্রমশ কমে আসছে। “পাটনায় আগে ৩০০টা দোকান ছিল, এখন তার মধ্যে ১০০টা চলছে,” বলছেন তিনি। তাছাড়া, সোনা-রূপার কাজ আর ব্যবহার করা হয় না – এখন অ্যালুমিনিয়ামের যুগ।
আসগর ভাইও সবজি বাজারের একটা ছোটো কর্মশালায় কাজ করতে আসেন। জানালেন, ২০ বছর আগে বিহারশরিফ গঞ্জেই তবক বানানো হত। “আগে শহরেই তবক বানানো হত, কিন্তু কারিগর কমে যাওয়ায় এখানে আর বানানো হয় না। এখন পাটনা থেকে আসে,” বলছেন তিনি।
![Left: Pappu inherited chhapa skills from his maternal grandfather, but he he says he will not pass it on to his sons.](/media/images/03a-PXL_20231101_082854717-UKR-Bihars_chha.max-1400x1120.jpg)
![Right: Chhapa clothes at Pappu's workshop in the Sabzibagh area of Patna, Bihar. The glue smells foul and the foil comes off after a couple of washes, so the clothes are not very durable](/media/images/03b-PXL_20231101_082350497-UKR-Bihars_chha.max-1400x1120.jpg)
বাঁদিকে: দাদুর থেকে ছাপা কারিগরি শিখেছেন পাপ্পুজী, কিন্তু ছেলেদের আর একাজ শেখানোর ইচ্ছা নেই তাঁর। ডানদিকে: বিহারের পাটনার সবজিবাগ এলাকায় পাপ্পুজীর কর্মশালায় ছাপা কাপড়ের ডাঁই। আঠার গন্ধ কটূ লাগে, আর তবকও কয়েকবার ধোয়ার পরেই উঠে আসে, অর্থাৎ এই কাপড় খুব বেশিদিন ব্যবহারযোগ্য নয়
ছাপা কাজের মধ্যমণি হল তবক, মৃদুতম হাওয়া দিলেও উড়ে যায় এতই ক্ষীণতনু, আসগর ভাইয়ের জামায়, মুখে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে কিছু। দিনের শেষে গা থেকে তবক ঝাড়া আর হাতের চেটোয় জমে বসা আঠার মোটা আস্তরটা সাফ করা তাঁর একটা অন্যতম কাজ। “হাত থেকে আঠা তুলতে দু’ঘণ্টা লাগে। গরম জল দিয়ে রগড়াতে হয়,” জানালেন তিনি।
“আঠা খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়, তাই গোটা কাজটা খুব তাড়াতাড়ি করতে হয়,” কাজের ধাপগুলি আমাদের দেখাতে দেখাতে বললেন আসগর ভাই। কথার সঙ্গে সঙ্গেই ছোটো টিনের পাত্র থেকে আঠা তুলে বাঁ হাতের পাতায় মাখাচ্ছেন তিনি। হাত পুরোপুরি আঠায় ঢেকে গেলে পর কাঠের তৈরি ফুলের ছাঁচটা হাতের উপর রেখে ঘোরান যাতে আঠাটা ছাঁচে উঠে আসে, তারপর সেই আঠামাখা ছাঁচ বসান কাপড়ের উপর।
পেপারওয়েটের তলায় রাখা পাতলা তবকের তাড়া থেকে দ্রুত হাতে একটা তবক খুব সাবধানে বার করে এনেই আঠার ছাপ লাগানো জায়গাটার উপর বসান, যাতে তবকটা ছাঁচের নকশা-বরাবর বসে যায়।
তবকটা কাপড়ে লেগে গেলে সেটাকে আরও ভালো করে আটকাতে মোটা করে কাপড় দিয়ে চেপে রাখা হয়। “তবকটা যাতে একদম ঠিকঠাক করে কাপড়ে বসে সেইজন্যই এটা করা,” জানালেন তিনি।
অত্যন্ত সূক্ষ্ণ প্রক্রিয়া, অতি দ্রুত হাতে কাজ চলে, আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কাপড়ের উপর উঠে আসে চকচকে গোলাকৃতি একটা নকশা। সদ্য ছাপা কাপড়কে তারপর অন্তত ঘণ্টাখানেক রোদে দিয়ে রাখা হয় যাতে আঠাটা পুরোপুরি শুকায় আর তবকটা এঁটে বসে যায়।
কারিগর এইভাবে পর পর ছাপ দিয়ে যেতে থাকেন, মুহূর্তেরও অবসর নেই। এই মুহূর্তে যে লাল কাপড়টায় ছাপা করছেন সেটাকে ডালঢক্কন বলা হয় – বাঁশের টুকরি চাপা দিতে ব্যবহৃত হয়।
![Left: Mohammad Asghar rubs the glue kept in a tin pot onto his left palm. Due to continuous application, a thick layer of glues sticks to the palm and takes him two hours to remove.](/media/images/04a-DSC01684-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
![Right: He rotates the wooden flower mould on his palm to soak up the glue](/media/images/04b-DSC01689-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
বাঁদিকে: টিনের পাত্র থেকে আঠা নিয়ে বাঁ হাতের চেটোয় মাখাচ্ছেন মহম্মদ আসগর। বারবার আঠা মাখাতে মাখাতে হাতে মোটা আঠার আস্তর পড়ে যায়, দিনের শেষে সেই আঠা তুলতে ঘণ্টা দুই লেগে যায়। ডানদিকে: হাতের উপর ফুলের নকশা-তোলা কাঠের ছাঁচটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাতে আঠা মাখাচ্ছেন
![Left: Asghar stamps the sticky mould onto the cloth. Then he carefully pastes the foil sheet on the stamped part and further presses down with a pad until it is completely stuck.](/media/images/05a-DSC01695-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
![Right: The delicate process is performed swiftly and the design appears on the cloth which now has to be laid out to dry in the sun](/media/images/05b-DSC01700-UKR-Bihars_chhapa_artisans-wa.max-1400x1120.jpg)
বাঁদিকে: কাপড়ের উপর আঠামাখা ছাঁচটা দিয়ে ছাপ বসান আসগর ভাই। তারপর খুব সাবধানে আঠার ছাপ লাগানো অংশটার উপর তবক বসান এবং মোটা করে ভাঁজ করা কাপড় দিয়ে আরও চাপ দেন যতক্ষণ না সেটা পুরোপুরি এঁটে যাচ্ছে। ডানদিকে: সূক্ষ্ণ প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হয় খুব দ্রুত হাতে, পলক না ফেলতেই কাপড়ে নকশা উঠে যায়, আর তারপর সেটাকে রোদে শুকোতে দেওয়া হয়
মোটামুটি ১০-১২ বর্গসেন্টিমিটারের অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পাওয়া যায় ৪০০টির প্যাকে, দাম পড়ে ৪০০ টাকা; এক কিলো আঠার দাম ১০০-১৫০ টাকা। “ছাপা হলে দাম বেড়ে যায় প্রায় ৭০০-৮০০ টাকা,” জানাচ্ছেন ছাপা কাপড় বিক্রেতা পাপ্পুজী (তিনি শুধু এই নামটি ব্যবহার করতেই স্বচ্ছন্দ)। “কিন্তু খরিদ্দাররা কেউ অত টাকা দিতে চান না।”
বিহারের মুসলিমদের মধ্যে – বিশেষ করে রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তের মগধ অঞ্চলে – ছাপা কাপড় প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু প্রথায় অপরিহার্য ছাপা কাপড় – কনে এবং তাঁর পরিবারের সবাইকে ছাপা শাড়ি বা বিয়ের পোশাক পরতে হয়, সে তাঁরা ধনী হোন কী গরিব।
সাংস্কৃতিক তাৎপর্য থাকলেও ছাপা কাপড় খুব বেশিদিন পরা হয় না। “ছাপায় যে আঠা ব্যবহার করা হয় সেটার গন্ধ খুব কটূ। আর ছাপাটা এতই দুর্বল হয় যে এক-দু’বার কাচলেই গোটা অ্যালুমিনিয়ামের তবক খুলে বেরিয়ে আসে,” জানাচ্ছেন পাপ্পুজী।
বিয়ের মরসুমের তিন-চার মাস শেষ হয়ে গেলে ছাপার কাজ বন্ধ হয়ে যায়, আর কারিগরদের অন্য কাজ দেখতে হয়।
![Mohammad Reyaz (wearing glasses) works as a chhapa karigar in Pappu’s shop. He is also a plumber and a musician and puts these skills to use when chhapa work is not available](/media/images/06a-PXL_20231101_082046560-UKR-Bihars_chha.max-1400x1120.jpg)
![Mohammad Reyaz (wearing glasses) works as a chhapa karigar in Pappu’s shop. He is also a plumber and a musician and puts these skills to use when chhapa work is not available](/media/images/06b-PXL_20231101_082052763-UKR-Bihars_chha.max-1400x1120.jpg)
মহম্মদ রেয়াজ (চোখে চশমা) পাপ্পুজীর দোকানে ছাপা কারিগর হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও প্লাম্বিং-এর কাজ জানেন, বাদ্যযন্ত্র বাজান। ছাপার কাজ যখন থাকে না তখন এইসব গুণগুলোকে কাজে লাগান তিনি
‘দোকানে আট থেকে দশ ঘণ্টা কাজ করে তিনটে শাড়ি ছাপা শেষ করতে পারি,” জানালেন আসগর ভাই। “এই কাজে দিনে ৫০০ টাকা মতো আয় হয়, কিন্তু এটা তো মাত্র তিন থেকে চার মাস থাকে। ছাপার কাজ না থাকলে রাজমিস্ত্রির কাজ করি।”
আসগর ভাইয়ের বাড়ি বিহারশরিফ টাউনে, যে কর্মশালায় তিনি সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা অবধি কাজ করেন তার থেকে কিলোমিটার খানেক দূর। “পয়সা বাঁচাতে আমার ছেলে দুপুরে বাড়িতে রান্না করা খাবার দিয়ে যায়,” জানালেন তিনি।
মাঝে বছর পাঁচেকের জন্য দিল্লি চলে গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রির কাজ করতে। বর্তমানে এখানেই থাকেন স্ত্রী আর ১৪ এবং ১৬ বছর বয়সি দুই ছেলের সঙ্গে; দু’জনেই স্কুলে পড়ছে। আসগর ভাইয়ের কথায় বিহারশরিফে তাঁর যা আয় হয় তাতে তিনি সন্তুষ্ট, তার উপর পরিবারের সঙ্গেও থাকতে পারেন। “ইঁয়াহা ভি কাম হোইয়ে রহা হ্যায় তো কাহে লা বাহার জায়েঙ্গে [এখানেই কাজ পাচ্ছি, তো আর বাইরে যাব কেন]?” এই প্রতিবেদককে বললেন তিনি।
মহম্মদ রেয়াজ পাপ্পুজীর দোকানে ছাপা কারিগর হিসেবে কাজ করেন। ৬৫ বছর বয়সি রেয়াজজীও সারা বছর রোজগার বজায় রাখার জন্য অন্য কাজ শিখে রেখেছেন: “ছাপার কাজ যখন থাকে না একটা ব্যান্ডে বাজাই। তাছাড়া প্লাম্বিং-এর কাজও জানি। এইসব কাজ করেই সারাবছর চলে যায়।”
পাপ্পুজী জানাচ্ছেন এই কাজ থেকে পর্যাপ্ত আয় হয় না, সংসার চালানো কঠিন। বাড়িতে তাঁর আছেন স্ত্রী ও সাত থেকে ১৬ বছর বয়সি তিন সন্তান। “এতে প্রায় কোনও রোজগারই নেই বলতে গেলে। আজ পর্যন্ত হিসেব করে উঠতে পারলাম না যে একটা ছাপা কাপড়ে আমার মুনাফা কত থাকে। কোনওমতে বাড়িতে খাবারের জোগানটুকু করি,” বলছেন তিনি। এই মন্দা রোজগারের কারিগরি ছেলেদের উপর চাপিয়ে দিতে চান না তিনি। “হাম পাগল নেহি হ্যায় জো চাহেঙ্গে কি মেরে বেটে ইস লাইন মে আয়ে [আমি পাগল নাকি যে চাইব আমার ছেলেরা এই কাজে আসুক?]।”
![The star of the chhapa show is tabak (aluminium foil), so fine that it starts flying in the slightest breeze, some of it sticking to the craftsmen's face and clothes](/media/images/07-PXL_20231101_082336109-UKR-Bihars_chhapa_.max-700x560.jpg)
ছাপা কাজের মধ্যমণি হল তবক, মৃদুতম হাওয়া দিলেও উড়ে যায় এতই ক্ষীণতনু; কারিগরের জামায়, মুখেও উড়ে এসে জুড়ে বসে কিছু
*****
ছাপার উৎস এবং বিহারি মুসলিমদের সংস্কৃতিতে তার এই তাৎপর্যের ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। ব্রিটিশ ভারতের সার্জন ও সমীক্ষক ফ্রান্সিস বুকানন বিহারে হাতের ছাপা কাজ করা কারিগরদের ‘ছাপাগর’ নামে উল্লেখ করেছেন। “মুসলিম বিয়েতে ছাপা কাপড় পরার রীতি বিহারে কীভাবে এসেছে তার হদিশ করা কঠিন। তবে মগধ অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে যেহেতু এই সংস্কৃতি সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান, তাই ধরে নেওয়া যায় যে এর উৎস ওখানেই কোথাও,” বলছেন পাটনাবাসী ইতিহাসপ্রেমী উমর আশরফ।
আশরফ হেরিটেজ টাইমস্ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল এবং ফেসবুক পেজ চালান যেখানে বিহারের মুসলিমদের বিলুপ্ত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এই শিল্পকলার বিবর্তনের সঙ্গে দ্বাদশ শতাব্দীতে মগধ অঞ্চলে মুসলিমদের আগমনের যোগ আছে বলে মনে করা হয়। “সম্ভবত তাঁরাই বিয়েতে ছাপা কাপড় পরার ঐতিহ্যটি বহন করে এনেছিলেন, আর তারপর থেকে মগধে এই প্রথা চলে আসছে,” যোগ করেন তিনি।
ছাপা ছড়িয়ে পড়েছে বাকি দুনিয়াতেও: “এমন অনেক নিদর্শন আছে যেখানে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, এবং অন্যান্য দেশে চলে যাওয়া বিহারি মুসলিমরা বিয়েতে পরার জন্য ভারত থেকে ছাপা কাপড় নিয়ে যান,” জানালেন উমর আশরফ।
বিহারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে লড়াই করা এক ট্রেড ইউনিয়নিস্ট-এর স্মৃতিতে প্রদত্ত একটি বৃত্তির সহায়তায় এই নিবন্ধটি রচিত হয়েছে।
অনুবাদ: দ্যুতি মুখার্জী