“আমাদের কি এইভাবেই খেটে মরতে হবে আর আমাদের সন্তানরাও কি এই কষ্ট সয়ে যাবে? আমরা ঠিকঠাক রোজগার করলে আমাদের বাচ্চাগুলোরও তো মঙ্গল হবে। কিন্তু এখন যা হাল, আমি যে বুঝেই উঠতে পারছি না কোথা থেকে ওদের পেট ভরাব,” বলে উঠলেন দেবীদাস বেন্ডকুলে।

মার্চ মাসের ১১ তারিখ সমগ্র মহারাষ্ট্র থেকে প্রায় ৪০,০০০ কৃষিজীবী মুম্বই শহরে পা রাখলেন। তাঁরা নাসিক থেকে টানা ছ’দিন হেঁটে ১৮০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করে এসেছেন। তাঁদের এই পথ চলা ১২ তারিখ পর্যন্ত বজায় ছিল, পদযাত্রার শেষ ১৫-২০ কিলোমিটার নীরবে আর আঁধার মাথায় করে পথ হেঁটে শহরের দক্ষিণে আজাদ ময়দানে সমবেত হলেন। তাঁরা জানালেন সরকারের বহু বঞ্চনার শিকার তাঁরা, আর সেইসব দাবিদাওয়া নিয়েই তাঁরা এখানে এসেছেন। এই দাবিগুলির মধ্যে আছে ঋণ মকুব, ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্য বলবৎ, শস্য সংগ্রহ ইত্যাদি।

পারি-র সর্বপ্রথম পডকাস্টটি শুনুন: গণতন্ত্র রক্ষায় তৎপর যে সকল কৃষিজীবী

আমাদের প্রথম দফার পডকাস্টে আমরা দেবীদাস বেন্ডকুলের মতো কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। রাজ্য সরকার বারে বারে কৃষকদের দেওয়া কথার খেলাপ করেছে এবং সেই রোষেই তাঁরা এই পদযাত্রায় সামিল হয়েছেন। তাঁরা তাঁদের সংগ্রাম, জরুরি দাবিদাওয়া এবং স্বপ্নের কথা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন।

আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তথা গ্রামীণ ভারত ঘিরে কর্মরত প্রতিবেদক পি সাইনাথ এই আলোচনায় যোগদান করে হাজার হাজার কৃষিজীবীর এভাবে রাস্তায় নামার কারণ সম্বন্ধে আলোকপাত করেছেন। তিনি বলছিলেন কেমন অভুতপূর্ব শৃঙ্খলায় মিছিল চলেছিল আর কেমন করে এই আন্দোলনকারীরা মুম্বই শহরের শ্রেণি নির্বিশেষে সব মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। এই ঘটনা কেন ভারতবর্ষের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় সে কথাও আলোচনার শেষে বলেন তিনি।

১২ মার্চ মহারাষ্ট্র সরকার কৃষকদের বেশিরভাগ দাবি মেনে নিলেও এখনও তার অনেকগুলি পূরণ হয়নি।

এই ধরনের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের গুরুত্ব অপরিসীম। একমাত্র এই উপায়েই দরিদ্র জনসাধারণের কথা মানুষের কাছে পৌঁছায়। পডকাস্টের এই পর্বে এবং একটি সদ্য প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে সাইনাথ বিশাল মাত্রায় গণতান্ত্রিক প্রতিবাদে সামিল হওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন, এবং এরই পাশাপাশি কেবলমাত্র কৃষিসংকট এবং সেই সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্রে রেখে সংসদে তিন সপ্তাহ বা ২১ দিন-ব্যাপী দুইকক্ষের বিশেষ যুগ্ম অধিবেশনের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার কথাও বলেছেন।

খেতেখামারে কর্মরত অগণিত কৃষিজীবীর সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সংগ্রামের কথা তুলে আনা আলোকচিত্রী ও প্রতিবেদক সার্থক চাঁদ; এই পদযাত্রা সম্বন্ধে একের পর এক আলেখ্য রচনাকারী পারি ফেলো পার্থ এম এন; পডকাস্টের এই পর্ব তৈরিতে সহায়ক হিমাংশু সইকিয়া, সিদ্ধার্থ আদেলকার, আদিত্য দীপঙ্কর এবং গৌরব শর্মা – সকলের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা।

অনুবাদ: মহুয়া মহারাণা
অনুবাদ সম্পাদনা: স্মিতা খাটোর

Vishaka George

বিশাখা জর্জ পারি’র বরিষ্ঠ সম্পাদক। জীবিকা এবং পরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করেন। পারি’র সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ সামলানোর পাশাপাশি বিশাখা পারি-র প্রতিবেদনগুলি শ্রেণিকক্ষে পৌঁছানো এবং শিক্ষার্থীদের নিজেদের চারপাশের নানা সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা বিভাগে কাজ করেন।

Other stories by বিশাখা জর্জ
Samyukta Shastri

সময়ুক্তা শাস্ত্রী পারির পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা কাউন্টার মিডিয়া ট্রাস্টের অছি সদস্য হওয়ার পাশাপাশি একজন স্বতন্ত্র সাংবাদিক, ডিজাইনার ও কর্মদ্যোগী। ২০১৯ সালের জুন মাস অবধি তিনি পারির কন্টেন্ট কোওর্ডিনেটর ছিলেন।

Other stories by সমযুক্তা শাস্ত্রী
Text Editor : Sharmila Joshi

শর্মিলা জোশী পিপলস আর্কাইভ অফ রুরাল ইন্ডিয়ার (পারি) পূর্বতন প্রধান সম্পাদক। তিনি লেখালিখি, গবেষণা এবং শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত।

Other stories by শর্মিলা জোশী
Translator : Mahua Maharana

মহুয়া মহারানা দুই দশকের বেশি সময় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর এক দশক সমজ সেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে স্বামী ও পোষ্য সারমেয়র সঙ্গে অবসর জীবন অতিবাহিত করছেন। বইপত্র পড়া, সলিটেয়ার গেমস খেলা, অনুবাদ ও কন্টেট লেখার কাজ নিয়ে মহুয়া ব্যস্ত থাকেন।

Other stories by Mahua Maharana