আন্ধেরি স্টেশনে স্থির দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের শরীরে বিকট শব্দে হুড়মুড়িয়ে ভরা জোয়ারের মতো ঢুকে আসছে জনস্রোত, হাতের কাছে যা পায় তাই আঁকড়ে ধরে – দরজার হ্যান্ডেল, অন্য কারও হাত। একটা ফাঁকা সিটের জন্য ধাক্কাধাক্কি, মারামারি, গুঁতোগুঁতি চলছে; যারা বসে আছে তাদের কাছে কাকুতিমিনতি থেকে ঝগড়া, এমনকি ঠেলে সরানোর চেষ্টাও চলছে।

স্রোতের টানে এগিয়ে চলেছেন ৩১ বছর বয়সি কিষাণ যোগী আর সমুদ্রনীল রাজস্থানি ঘাগরা-চোলি গায়ে তাঁর ১০ বছরের মেয়ে ভারতী। সন্ধে ৭টার মুম্বই লোকালটি পশ্চিম শহরতলি লাইনের পাঁচ নম্বর ট্রেন যেটায় বাবা উঠেছেন মেয়েকে নিয়ে।

ট্রেনের গতি বাড়ে, যাত্রীরা মোটামুটি গুছিয়ে বসেন, আর সঙ্গে সঙ্গে বেজে ওঠে কিষাণের সারেঙ্গি।

“তেরি আঁখে ভুলভুলাইয়া… বাতে হ্যায় ভুলভুলাইয়া…”

ডানহাতে নিপুণ ক্ষীপ্রতায় তিন তারের সরু যন্ত্রটির উপর ছড় টেনে টেনে মন্দ্র মধুর গুনগুন সুর তোলেন তিনি। যন্ত্রের অন্যদিকের ছোটো খোলটি সামলে রাখা আছে বুক আর বাম বাহুর মধ্যে। ২০০২ সালের বলিউড ছবি ‘ভুল ভুলাইয়া’-র এই জনপ্রিয় গানটি তাঁর বাদনের গুণে যেন বেদনাবিধুর হয়ে ওঠে।

কামরার কয়েকজন যাত্রী দিনগত পাপক্ষয় থেকে মন সরিয়ে ক্ষণিকের জন্য মগ্ন হয়ে যান মধুর সুরে। কেউ কেউ ফোন বার করে রেকর্ড করেন। অজান্তে স্মিত হাসি ফুটে ওঠে কারও কারও মুখে। কিন্তু অনেকেই কানে গুঁজে নেন ইয়ারপ্লাগ, মন দেন হাতের ফোনে। ছোট্ট ভারতী ঘুরে ঘুরে পয়সা চাইতে এলে তবেই মুখ তুলে তাকান।

‘বাবা এই সারেঙ্গি আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছেন। আমি কোনওদিন স্কুলে যাওয়ার কথাও ভাবিনি। শুধু বাজিয়ে গেছি’

“আগে লোকে আমায় দেখে বাজানোর জায়গা ছেড়ে দিত,” কিষাণের গলা বিষণ্ণ শোনায়। ১০-১৫ বছর আগে অবস্থা কতটা আলাদা ছিল তার স্মৃতিচারণ করছেন তিনি। “এটার কদর অনেক বেশি ছিল। কিন্তু এখন সবাই কানে ইয়ারফোন গুঁজে ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে বিনোদনের জন্য। আমার সংগীতে কেউ আর আগ্রহী নয়।” এক মুহূর্ত দম নিয়ে নতুন সুর তোলেন তিনি।

আমি লোকগীতি, ভজন সব বাজাতে পারি… রাজস্থানি, গুজরাটি, হিন্দি গান, যা বলবেন… আমার শুনে শুনে তুলে ফেলতে চার-পাঁচ দিন লাগে, তারপরেই সারেঙ্গিতে বাজাই। প্রতিটা স্বর যাতে ঠিক ঠিক লাগে তার জন্য প্রচুর অনুশীলন করতে হয়,” পরের গানটার জন্য সারেঙ্গির লয় বাঁধতে বাঁধতে বললেন তিনি।

ওদিকে ভারতীকে দেখে কয়েকজন ছোট কয়েন, বা হয়তো বড়ো নোটের জন্যও মানিব্যাগ হাতড়াচ্ছেন। ট্রেনের চাকার মতোই ক্ষীপ্রগতিতে কামরার মধ্যে ঘুরে বেড়ায় ছোট্ট মেয়েটি, পরের স্টেশনের আগে যেন একজন যাত্রীও বাদ না পড়ে থাকে।

কিষাণের বাঁধা উপার্জন নেই – কোনওদিন হয়তো দিনে ৪০০ টাকা হল, কোনওদিন ১০০০ টাকাও হয়ে যায়। বিকেল পাঁচটেয় বাড়ির কাছে নাল্লাসোপারা স্টেশন থেকে পশ্চিম লাইনের মুম্বই লোকালে উঠে পড়ার পর এই ট্রেন সেই ট্রেন করতে করতে প্রায় ছয় ঘণ্টার অক্লান্ত পরিশ্রমের শেষে এই রোজগার। বাঁধাধরা কোনও যাত্রাপথ নেই তাঁর, তবে মূলত চার্চগেট আর ভিরার স্টেশনের মাঝে যাওয়াআসা করেন; কোন ট্রেনে উঠবেন সেটা বাছেন ভালো ভিড় আছে কিনা এবং তাঁর বাজানোর জন্য জায়গা আছে কিনা সেটা দেখে নিয়ে।

“সকালে মানুষ কাজে দৌড়োয়, সব ট্রেন ভিড়ে ভিড়াক্কার, কে আমায় পাত্তা দেবে?” সন্ধের ট্রেন কেন বাছেন তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন কিষাণ। “ফেরার সময়ে সবাই একটু হলেও চিন্তামুক্ত থাকে। কেউ কেউ আমায় সরিয়ে দেয়, কিন্তু আমি পাত্তা দিই না। আর কীই বা করার আছে?” উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া এই শিল্পই তাঁর একমাত্র সম্বল।

Kishan Jogi with his daughter Bharti as he plays the sarangi on the 7 o’clock Mumbai local train that runs through the western suburb line
PHOTO • Aakanksha

পশ্চিম শহরতলি লাইনের সন্ধে ৭টার মুম্বই লোকালে সারেঙ্গি বাজাচ্ছেন কিষাণ যোগী, সঙ্গে মেয়ে ভারতী

রাজস্থানের লুনিয়াপুরা গ্রাম থেকে যখন পুরো পরিবার এই শহরে চলে আসেন, মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন আর রাস্তাঘাটে সারেঙ্গি বাজিয়ে ফিরতেন তাঁর বাবা মিতাজি যোগী। “আমার মাত্র ২ বছর বয়স যখন বাবা-মা আমায় আর ভাই বিজয়কে নিয়ে মুম্বই চলে আসে,” স্মৃতিচারণ করছেন তিনি। ভারতী যখন থেকে বাবার সঙ্গে ঘোরা শুরু করেছেন কিষাণ তখন তার থেকেও ছোটো।

যোগী জনগোষ্ঠীভুক্ত (রাজস্থানে অন্যান্য অনগ্রসর জাতি হিসেবে নথিভুক্ত) মিতাজি নিজেকে শিল্পী হিসেবেই দেখতেন। গ্রামে তাঁর পরিবারের বংশানুক্রমিক পেশা ছিল লোকসংগীতের প্রাচীন তারযন্ত্র রাবণহাথা বাদন। এখানে শুনুন: উদয়পুরে যাঁদের হেফাজতে সুরক্ষিত রয়েছে রাবণহাথা

“কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় উৎসব থাকলে বাপ [বাবা] আর অন্য বাদকদের বায়না দেওয়া হত,” বলছেন কিষাণ। “তবে সেও কালেভদ্রে। আর দক্ষিণা যা পাওয়া যেত তা সব বাদকরা ভাগ করে নিতেন।”

রোজগারে এই ঘাটতির কারণেই মিতাজি এবং তাঁর স্ত্রী নামমাত্র মজুরিতে কৃষিশ্রমিকের কাজ শুরু করতে বাধ্য হন। “গ্রামের গরিবির কারণেই আমরা মুম্বই চলে আসতে বাধ্য হই। ওখানে আর কোনও ধান্দা মজদোরির [ব্যবসা, মজুরি কাজ] উপায় হচ্ছিল না,” যোগ করলেন তিনি।

মুম্বই এসেও কাজ পাননি মিতাজি, তাই ঘুরে ঘুরে রাবণহাথা বাজাতেন, পরবর্তীকালে সারেঙ্গি। “রাবণহাথার তার অনেক বেশি, আর সুর আরও মন্দ্র,” অভিজ্ঞ শিল্পীর স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাখ্যা করলেন কিষাণ। “কিন্তু সারেঙ্গির স্বর বেশি তীব্র, আর তারের সংখ্যাও কম। বাবা সারেঙ্গি বাজাতে শুরু করেন কারণ লোকের ওটাই বেশি ভালো লাগত। সারেঙ্গিতে অনেক বেশি ধরনের সুর বাজানো যায়।”

A photograph of Kishan's father Mitaji Jogi hangs on the wall of his home, along with the sarangi he learnt to play from his father.
PHOTO • Aakanksha
Right: Kishan moves between stations and trains in search of a reasonably good crowd and some space for him to play
PHOTO • Aakanksha

বাঁদিকে: কিষাণের বাড়ির দেওয়ালে বাবা মিতাজি যোগীর ছবি, পাশেই ঝুলছে সারেঙ্গি যাতে বাবার কাছ থেকে বাজানো শিক্ষা করেছিলেন তিনি। ডানদিকে: নানা স্টেশনে এবং ট্রেনে ঘুরে বেড়ান কিষাণজি ভালো একটা ভিড় এবং মোটামুটি দাঁড়িয়ে বাজানোর জন্য একটু জায়গায় খোঁজে

কিষাণের মা যমনা দেবীও দুই শিশুকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঘুরেছেন নানা জায়গায়। “এখানে যখন প্রথম আসি, ফুটপাথই ঘরবাড়ি ছিল,” মনে করছেন কিষাণ। “যেখানে একটু জায়গা পেতাম শুয়ে পড়তাম।” তাঁর যখন আট বছর বয়স, ততদিনে জন্ম নিয়েছে আরও দুই ভাই – সুরয আর গোপী। “ওই সময়টা আর মনেও করতে চাই না,” বলছেন দৃশ্যতই বিব্রত কিষাণ।

যে স্মৃতিগুলো আঁকড়ে রাখতে চান তা হল তাঁর বাবার সংগীত। নিজের বানানো কাঠের একটা সারেঙ্গিতে কিষাণ ও তাঁর ভাইদের বাজানো শিখিয়েছিলেন তিনি। “রাস্তা আর ট্রেনই ছিল তাঁর মঞ্চ। যে কোনও জায়গায় দাঁড়িয়ে বাজাতেন, কেউ তাঁকে বাধা দিত না। যখনই বাজাতেন, বিরাট ভিড় জমে যেত,” দু’হাত প্রসারিত করে ভিড়ের আকার বোঝাতে বোঝাতে উত্তেজিত গলায় বলেন কিষাণ।

তাঁর ছেলের প্রতি রাস্তা এতটা সদয় হয়নি। বিশেষ করে, জুহু-চৌপট্টি সৈকতে পর্যটকদের সামনে বাজানোর সময়ে একবার পুলিশে ধরে ১,০০০ টাকা চায়, সেই লজ্জাজনক অভিজ্ঞতার পর থেকেই। জরিমানা দিতে পারেননি বলে ঘন্টা দুয়েকের জন্য তাঁকে গারদে পুরে দেওয়া হয়েছিল। “আমার কী দোষ ছিল আমি এখনও বুঝিনি,” বলছেন কিষান। সেই ঘটনার পর থেকেই ট্রেনে বাজানো শুরু করেন তিনি। তবে তাঁর মতে বাবার প্রতিভার কাছাকাছিও তিনি কোনওদিন যেতে পারবেন না।

“বাবা অনেক বেশি ভালো বাজাতেন, আমার চেয়ে অনেক বেশি ভালোবেসেও বাজাতেন,” জানালেন কিষাণ। সারেঙ্গি বাদনের সঙ্গে সঙ্গে গানও গাইতেন মিতাজি, ছেলে গানের থেকে দূরেই থাকেন। “আমি আর আমার ভাই বাজাই বাঁচার জন্য।” কিষাণের যখন ১০ বছর বয়স তাঁর বাবার মৃত্যু হয়, সম্ভবত যক্ষারোগে। “আমাদের খাওয়ারই পয়সা ছিল না, হাসপাতাল তো অনেক দূর।”

ছোটোবেলা থেকেই উপার্জন শুরু করতে হয়েছে কিষাণকে। “আর কিছু ভাবার সময় কোথায় পেলাম? বাপ নে সারঙ্গি থমা দি, কভি স্কুল কা ভি নেহি সোচা বস বজাতে রেহ গয়া [বাবা হাতে সারেঙ্গি ধরিয়ে দিয়েছিলেন। স্কুলের ব্যাপারে কোনওদিনও ভাবিনি, শুধু বাজিয়ে গেছি],” বলছেন তিনি।

Left: Kishan with one of his younger brothers, Suraj.
PHOTO • Aakanksha
Right: Kishan with his wife Rekha and two children, Yuvraj and Bharati
PHOTO • Aakanksha

বাঁদিকে: ছোট ভাই সুরযের সঙ্গে কিষাণ। ডানদিকে: স্ত্রী রেখা এবং দুই সন্তান যুবরাজ ও ভারতীর সঙ্গে কিষাণ

বাবার মৃত্যুর পর ছোটো দুই ভাই বিজয় আর গোপীকে নিয়ে মা রাজস্থানে ফিরে যান, আর সুরয চলে যান নাসিকে। “ওরা মুম্বইয়ের ভিড়ভাড়াক্কা পছন্দ করে না, সারেঙ্গি বাজাতেও ভালোবাসে না,” জানালেন কিষাণ। “সুরজ অবশ্য বাজাতো, এখনও বাজায়। তবে ও আরও দুটো কাজ করে সংসার চালানোর জন্য।”

“মুম্বইয়ে এখনও কেন পড়ে আছি জানি না, কিন্তু এখানে নিজের একটা ছোট্ট দুনিয়া বানিয়ে ফেলেছি,” বললেন কিষাণ। তাঁর এই ছোট্ট দুনিয়ার একটা বড়ো অংশ হল মুম্বইয়ের উত্তর শহরতলির পশ্চিম নাল্লাসপোরা অঞ্চলে তাঁর মাটির মেঝেওয়ালা ঝুপড়ি ঘরটুকু। দশ ফুট বাই দশ ফুট ঘরে দেওয়াল বলতে আছে অ্যাসবেসটস শিট, আর ছাদ বলতে টিনের পাত।

আমাদের ঘরে স্বাগত জানান রেখা, কিষাণের প্রথম প্রেম আর আজ ১৫ বছর হল তাঁর গিন্নি এখন দুই সন্তান ভারতী ও তিন বছর বয়সি যুবরাজের মা। ছোট্ট একরত্তি ঘরে এই বাদে চারজন আছে রান্নাঘর, জামাকাপড় আর একটা ছোট টিভি সেট। কিষাণের ‘সম্পদ’, তাঁর সারেঙ্গি দেওয়ালের এককোণে একটা কংক্রিটের থামের পাশে ঝোলানো থাকে।

রেখাকে তাঁর সবচেয়ে পছন্দের গান কোনটা জিজ্ঞেস করতেই ফুট কাটেন কিষাণ, “হর ধুন উসকে নাম [আমার সব গানই তো ওর জন্য]।”

“ওর বাজানো ভালোবাসি আমি, কিন্তু শুধু ওতে ভরসা করে আর দিন চলে না,” বলছেন রেখা। “আমি চাই ও একটা সাধারণ চাকরি করুক। আগে শুধু আমরা দুইজন ছিলাম, কিন্তু এখন বাচ্চাদুটোও আছে।”

'I can play even in my sleep. This is all that I know. But there are no earnings from sarangi, ' says Kishan
PHOTO • Aakanksha

‘আমি ঘুমের মধ্যেও বাজাতে পারি। আমি শুধু এটাই পারি। কিন্তু সারেঙ্গি থেকে কোনও উপার্জন নেই,’ বলছেন কিষাণ

কিষাণের সঙ্গে ট্রেনে ট্রেনে পাড়ি দিয়ে ফেরা ভারতী নেলিমোরে তাদের বাড়ি থেকে সামান্য দূরে জিলা পরিষদ সরকারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল শেষ হলেই বাবার সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে। “বাবা যা বাজায় সবই ভালো লাগে, কিন্তু রোজ রোজ সঙ্গে যেতে ভালো লাগে না, বলছে ভারতী। “বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে, নাচতে ইচ্ছে করে।”

“ওকে যখন থেকে নিয়ে যাওয়া শুরু করি ওর বয়স পাঁচ হবে,” বলছেন কিষাণ, “কী করব? আমিও চাই না ওকে নিয়ে যেতে, কিন্তু আমি বাজানোর সময়ে ঘুরে ঘুরে পয়সা নেওয়ার জন্যেও তো কাউকে চাই, নইলে আমরা রোজগার করব কী করে?”

শহরে অন্যান্য কাজ খুঁজে চলেছেন কিষাণ, কিন্তু কোনও শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় এখনও পর্যন্ত কিছু জোটেনি। ট্রেনে যখন লোকে তাঁর নম্বর চায়, তাঁর আশা থাকে বড়ো কোনও জায়গায় বাজাতে ডাকবে। কয়েকটা বিজ্ঞাপনের আবহসংগীতের কাজ করেছেন তিনি। মুম্বইয়ের কিছু স্টুডিও ঘুরেছেন, ফিল্ম সিটি, পারেল এবং ভারসোভায়। কিন্তু এই সবই এককালীন কাজ, কালেভদ্রে একবারে ২,০০০ থেকে ৪,০০০ টাকা মতো আয় হয়েছে।

এইরকম সুযোগ মিলেছে তারও চার বছর হয়ে গেল।

Left: A sarangi hanging inside Kishan's house. He considers this his father's legacy.
PHOTO • Aakanksha
Right: Kishan sitting at home with Bharti and Yuvraj
PHOTO • Aakanksha

বাঁদিকে: কিষাণের বাড়ির দেওয়ালে ঝুলন্ত সারেঙ্গি। এটাকেই বাবার উত্তরাধিকার মনে করেন তিনি। ডানদিকে: ভারতী আর যুবরাজের সঙ্গে ঘরে বসে কিষাণ

এক দশক আগেও রোজ ৩০০-৪০০ টাকায় দিন চলে যেত, এখন আর চলে না। বাড়ি ভাড়া ৪,০০০ টাকা, তার পরে আছে রেশন, জল, বিজলি – সব মিলিয়ে মাসের খরচ ১০,০০০ হয়েই যায়; মেয়ের স্কুলে ৬ মাস অন্তর অন্তর ৪০০ টাকা নেয়।

দিনের বেলা স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই চিন্দিওয়ালা বা ফেলা কাপড় কারবারির কাজ করেন – অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি ঘুরে পুরানো কাপড় কিনে তৃতীয় কোনও ব্যবসায়ীকে তা বিক্রি করার কাজ। কিন্তু এই আয়ও অস্থায়ী, নিয়মিতও নয়। কাজ এলে দিনে মোটামুটি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা মতো আয় হয়।

“আমি ঘুমের মধ্যেও বাজাতে পারি। আমি শুধু এটাই পারি,” বলছেন কিষাণ। কিন্তু সারেঙ্গি থেকে কোনও উপার্জন নেই।”

“ইয়ে মেরে বাপ কা নিশানি হ্যায় অওর মুঝে ভি লগতা হ্যায় ম্যায় কলাকার হুঁ… পর কলাকারি সে পেট নেহি ভরতা না [এটা আমার বাবার আশীর্বাদ, আর আমার নিজেরও বিশ্বাস আমি একজন শিল্পী… কিন্তু শিল্প করে তো আর পেট চলে না, তাই না]?”

অনুবাদ: দ্যুতি মুখার্জী

Aakanksha

আকাঙ্ক্ষা পিপলস আর্কাইভ অফ রুরাল ইন্ডিয়ার একজন সাংবাদিক এবং ফটোগ্রাফার। পারি'র এডুকেশন বিভাগে কনটেন্ট সম্পাদক রূপে তিনি গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থীদের তাদের চারপাশের নানান বিষয় নথিভুক্ত করতে প্রশিক্ষণ দেন।

Other stories by Aakanksha
Editor : Pratishtha Pandya

কবি এবং অনুবাদক প্রতিষ্ঠা পান্ডিয়া গুজরাতি ও ইংরেজি ভাষায় লেখালেখি করেন। বর্তমানে তিনি লেখক এবং অনুবাদক হিসেবে পারি-র সঙ্গে যুক্ত।

Other stories by Pratishtha Pandya
Translator : Dyuti Mukherjee

দ্যুতি মুখার্জী কলকাতা নিবাসী অনুবাদক এবং প্রকাশনা ক্ষেত্রে কর্মরত একজন পেশাদার কর্মী।

Other stories by Dyuti Mukherjee