“ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও তো খেতে হয়, তাই না! আপনার কাছে যতই টাকা থাক না কেন, টাকা দিয়ে তো আর পেট ভরবে না! পেট ভরার জন্য খাবার দরকার,” বলছেন, সিকন্দর গুলাম নবী শেখ। তাঁর প্রশ্ন, “বলুন দেখি এই খাবার কে জোগায়?”

বছর ৩৬-এর শেখ ডোম্বিভলির একজন অটোরিকশা চালক। রবিবার ২৫শে নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে তিনি কল্যাণ-ডোম্বিভলি – এই দুই যুগ্ম শহরের (মধ্য মুম্বইয়ের দাদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে) সহকর্মীদের সঙ্গে সমবেত হয়ে ভারতের কৃষকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে একটি স্বাক্ষর অভিযান চালাচ্ছিলেন।

অটোরিকশা চালকরা ডোম্বিভলি (পূর্ব) স্টেশনের বাইরে রামনগর অটোরিকশা স্ট্যান্ডে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত এবং মূল অটোরিকশা স্ট্যান্ডে বিকেল ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সমবেত হয়েছিলেন। ৭-৮ জন অটো রিকশা চালকের একটি দল, তাঁদের সঙ্গীসাথি এবং ইউনিয়নের কর্মীরা সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানানো ‘নেশন ফর ফারমারস’ [কৃষিজীবীদের সঙ্গে দেশ] হোর্ডিং মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলেন। উপস্থিত অন্যন্য মানুষেরা হিন্দি, ইংরেজি ও মারাঠি ভাষায় লেখা প্রচার পুস্তিকা এবং আবেদনপত্রের কপিসহ একটি টেবিলে বসেছিলেন। রাষ্ট্রপতিকে লেখা এই আবেদনপত্রে দেশের গভীর কৃষি সংকট এবং অন্যান্য শ্রমজীবী গোষ্ঠীগুলির ক্রমবর্ধমান সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানানো হয়।

মুম্বই শহরতলি ঘিরে যে রেল ব্যবস্থা আছে তার সেন্ট্রাল লাইনে ডোম্বিভলি স্টেশন অবস্থিত। প্রতিদিন মুম্বই মেট্রোপলিটান এলাকার হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী স্টেশনে যাতায়াত করেন। আর পাঁচটা শহরতলির রেলস্টেশনের মতো ডোম্বিভলি ইস্টের বাইরেও পোশাক, গয়না, মনিহারি জিনিসপত্র ইত্যাদির পসরা নিয়ে দোকান বসে। রয়েছে ব্যাংক, এটিএম এবং মুদ্রণ পরিষেবা। রাস্তায় ফেরি করা বিক্রেতারা ফুটপাথে মোবাইল ফোনের ঢাকনা, ফল, শাকসবজি এবং রকমারি মালপত্র বিক্রি করে থাকেন। এখানে আছে চায়ের দোকান এবং কোচিং ক্লাস।

এই ভিড় এবং ব্যস্ততার মধ্যে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এমন বক্তব্য রাখা প্রয়োজন যা শুনতে মানুষ বাধ্য হবে।

PHOTO • Siddharth Adelkar
PHOTO • Siddharth Adelkar

অটোরিকশা চালকদের একটি দল এবং সংগঠনের কর্মীরা ‘নেশন ফর ফারমারস’ [কৃষিজীবীদের সঙ্গে দেশ] হোর্ডিং মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলেন। বাকিরা আবেদনপত্রের প্রতিলিপি নিয়ে টেবিলে বসেছিলেন

যখন শেখ ও তাঁর বন্ধুরা চোঙা মাইকের সাহায্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষকদের সমস্যার কথা বর্ণনা করছিলেন, তখন পথচলতি মানুষ থেমে গিয়ে তাঁদের কথা শুনছিলেন। হাজার তাড়ার মধ্যেও দুদণ্ড দাঁড়িয়ে হোর্ডিঙে লেখা বক্তব্য তাঁরা পড়ে নিচ্ছিলেন। অনেকেই টেবিল পেতে বসা স্বেচ্ছাকর্মীদের নানান প্রশ্ন করছিলেন। আবার অনেকে সরাসরি টেবিলে গিয়ে প্রশ্ন করছিলেন, “কোথায় সই করতে হবে?”

এই অটোরিকশা চালকরা লাল বাভতা অটোরিকশা ইউনিয়নের মাধ্যমে এখানে সমবেত হয়েছিলেন, ডোম্বিভলি ভিত্তিক প্রায় ১০০০ সদস্যদের এই সংগঠনটি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত। রেলস্টেশন চত্বরের এই প্রচার কর্মসূচির ঠিক এক সপ্তাহ আগে ১৭ই নভেম্বর এখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তিলক চৌকে ইউনিয়নের কার্যালয়ে ‘নেশন ফর ফারমারস’-এর ডোম্বিভলি অধ্যায়টি গঠন করা হয়।

“জাতীয় রাজনীতিতে কিষান লং মার্চ গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। যখন এই আন্দোলনের নেতৃত্ব আগামীদিনে শহরবাসীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানালেন, তখন এটা [কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে] আমার নৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়ালো,” বলছেন ভি. দেবান।

২০১৮ সালের মার্চ মাসে যখন প্রায় ৪০,০০০ কৃষক নাসিক থেকে মুম্বই পর্যন্ত ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা করেন, তখন মুম্বই ও থানের মধ্যবিত্ত শ্রেণির বাসিন্দারা তাঁদের সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এই সংহতির বোধ গভীর অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করেছে। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঔরঙ্গাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, নাগপুর, পুণে এবং অন্যান্য মহানগর ও শহরে ‘নেশন ফর ফারমার্স’ গোষ্ঠী (এনএফএফ) গঠিত হয়। ডোম্বিভলি এনএফএফ গোষ্ঠীর মতোই, এই সকল শহর গোষ্ঠীগুলিও রাষ্ট্রপতির কাছে লেখা আবেদনপত্রটিতে স্বাক্ষর করতে নাগরিকদের অনুরোধ জানাচ্ছে।

প্রায় ২০০টি কৃষি এবং অন্যান্য সংগঠন মিলে গঠিত যৌথ মঞ্চ অখিল ভারত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির ডাকে ২৯-৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য দিল্লির সংসদ ভবন যাত্রার অঙ্গ এই স্থানীয় কর্মসূচিগুলি।

ডোম্বিভলি এনএফএফ গোষ্ঠীটিকে সক্রিয়ভাবে চালনা করার জন্য দেবান অটোরিকশা ইউনিয়নের সভাপতি কালু কোমাস্কারের সঙ্গে যৌথভাবে কিষান মার্চ ঘিরে প্রস্তুতি সভায় বন্ধু, সহকর্মী এবং সহযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানান। ছোটোখাটো যন্ত্রপাতির ব্যবসায়ী দেবান কেরালের ত্রিসুর জেলার ইরিঞ্জালাকুড়া শহরের আদি নিবাসী হলেও বিগত ৩৮ বছর ধরে ডোম্বিভলিতেই বসবাস করছেন।

দেবানের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন পেশায় শিক্ষক সুজাতা খায়রনার; আবেগপ্রবণ হয়ে তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্রের জনৈক কৃষকের আত্মহত্যার খবর আমি দেখেছি। তাঁর পরিবারের সদস্যদের মুখ দেখে আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলাম। কৃষকদের জন্য কিছু যদি করার মুরোদ আমাদের না থাকে, অন্তত তাঁদের পরিবারগুলির কথাটুকু যেন আমরা একবার ভেবে দেখি।”

president of the autorickshaw union,
PHOTO • Himanshu Chutia Saikia
PHOTO • Siddharth Adelkar

বাঁদিকে: অটোরিকশা ইউনিয়নের সভাপতি কালু কোমাস্কার কিষান মার্চ ঘিরে প্রস্তুতি সভায় বন্ধু , সহকর্মী এবং সহযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানান। ডানদিকে: ‘কৃষকের পাশে দেশ’ ডোম্বিভলি অধ্যায়ের সূচনাকারী ভি দেবান দেখছেন টেবিলে বসা সুজাতা খায়রনার ও তাঁর সহকর্মীরা ডোম্বিভলির নাগরিকদের দিয়ে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করাচ্ছেন

এই বৈঠকে কোমাস্কার পরামর্শ দেন যে অটোরিকশা চালকদের প্রতিদিন যেহেতু বিপুল সংখ্যক শহুরে যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়, অতএব তাঁরা কৃষকদের ব্যাপারে এই মধ্যবিত্ত যাত্রীদের সমর্থন নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন। ২৩শে নভেম্বর, কোমাস্কার ও এনএফএফ-এর ছোট্ট দলটি বেশ কয়েকটি স্ট্যান্ডের অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে দেশের কৃষি সংকট বিষয়ে আলোচনা চালান। বহু অটোরিকশা চালক নিজেরাই যেহেতু কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান তাই অবিলম্বেই তাঁরা এই প্রচার কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম বোধ করলেন।

ধরা যাক ৫২ বছর বয়সী অটোচালক জালিন্দর ভোইরের কথাই, যিনি বললেন, “আমি নিজে কৃষকেরই ছেলে। ডোম্বিভলির উপকণ্ঠে গ্রামীণ এলাকায় আমাদের এখনও এক টুকরো জমি আছে যেখানে আমরা ধান চাষ করি। আজ আমার সহনাগরিক কৃষক, আমার ‘বলি রাজা’ [একজন পৌরাণিক কৃষক রাজা] দুর্দশায় পড়েছে। আত্মহত্যার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ভুল নীতির কারণে এই পরিস্থিতি। আমি এই সংকট সম্পর্কে সচেতন করব প্রত্যেক যাত্রীকে। আমি মন প্রাণ এবং আবেগ দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করব। এটা তো আমার কর্তব্য। আমি জানি ডোম্বিভলির বাসিন্দারা সাড়া দেবেন।”

সেইমতো ২৫শে নভেম্বর রবিবার, অটোরিকশা ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন এনএফএফ দলটি ডোম্বিভলি স্টেশনের দুটি বড়ো অটোরিকশা স্ট্যান্ডের সামনে সমবেত হয়ে, রাষ্ট্রপতির কাছে লেখা পিটিশনটি স্বাক্ষর করার জন্য নাগরিকদের কাছে আবেদন রাখে।

ভোইরের কথা মতো নাগরিকদের কাছ থেকে সদর্থক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল। প্রচারের প্রথম দিন, একদিনেই প্রায় ১,০০০ মানুষ রাষ্ট্রপতিকে লেখা আবেদনপত্রটিতে স্বাক্ষর করলেন। সোমবারও প্রায় সমসংখ্যক মানুষ স্বাক্ষর করলেন।

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে একজন হলেন বছর ৪৮-এর দোকানদার দীপক গুপ্তা; তাঁর কথায়, “কৃষকরা ঋণে ডুবে আছেন এবং চরম দুর্দশা ভোগ করছেন। তাঁদের পরিশ্রমের উপরেই তো বাকি সব দাঁড়িয়ে আছে,” নিওন আলো দেওয়া বোর্ড, রেস্তোরাঁ এবং দোকানগুলি দেখিয়ে ইঙ্গিত করেন তিনি। আরও বলেন, “তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য তাঁদের দিতেই হবে।”

‘এই সংকট সম্পর্কে সচেতন করব প্রত্যেক যাত্রীকে। আমি মন প্রাণ এবং আবেগ দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করব। এটা তো আমার কর্তব্য। আমি জানি ডোম্বিভলির বাসিন্দারা সাড়া দেবেন’

ভিডিও দেখুন: আজকের দিনে আমাদের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হল কৃষি সংকট

সেদিন সন্ধ্যার ওই ভিড়ের মধ্যে ছিলেন ৮০ বছর বয়সী শান্তাবাঈ ওয়াঘরি, যিনি বিগত ৬০ বছর ধরে ডোম্বিভলির রাস্তায় সবজি ও ফুল বিক্রি করছেন। “আমাদের প্রজন্ম এই শহরের রাস্তায় কাজ করে চলেছে। সরকার কৃষক, শ্রমিক তো বটেই, এমনকি বেতনভোগী কর্মীদের সঙ্গেও সহযোগিতা করে না। কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সরকারকে অনুরোধ করছি। তাদের জল দেওয়া হোক, বীজ দিয়ে, চাষে এবং ফলনে সাহায্য করুক সরকার তাদের। এইসকল সুনাগরিকদের মঙ্গল করুক সরকার।”

অনেকেই যাঁরা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁরা নিজেরাও কৃষিজীবী পরিবার থেকে এসেছেন, অথবা এককালে তাঁদের বাবা-মা নিজেরাই কৃষক ছিলেন। যেমন, ধরা যাক ২৫ বছরের দীপালী ভারের কথাই। তিনি ডোম্বিভলির আনন্দপ্রেম ঋণ সমবায় সমিতিতে কাজ করেন। তাঁর কথায়, “আমি নিজেই পুণে জেলার ভোর অঞ্চলের ধান চাষিদের পরিবার থেকে এসেছি, কৃষকদের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন আছে।”

তাঁর সহকর্মী, ২১ বছর বয়সী স্বাতী মোরের কথায়, “আমরা কৃষকের দুর্দশার কথা শুনেছি। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে আমরা এই বোর্ডটা দেখে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলাম যে এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের ভালো করে জানা উচিত।”

বিগত ৩০ বছর ধরে ডোম্বিভলিতে রাঁধুনি হিসেবে কর্মরত, সাঙ্গলী জেলার কিরলোস্করওয়াড়ি থেকে আগত সীমা রাজন জোশী বলছিলেন, “আমরা আমাদের জমি হারিয়েছি... কৃষকদের সঙ্গে যুক্ত হতে পরে আমি খুব গর্বিত এবং আনন্দিত বোধ করি। কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য দিয়ে এবং ঋণ মকুব করে বাঁচানো দরকার।”

PHOTO • Siddharth Adelkar
a labourer
PHOTO • Siddharth Adelkar

জীবিকার সন্ধানরত, জালনা জেলার কৃষক নন্দকিশোর আরগাডে (বাঁদিকে) বলছেন , ‘একজন চাষিই জানে তাকে কত কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।’ ঔরঙ্গাবাদ জেলার জনৈক শ্রমিক , (ডানদিকে) অশোক গারুদের কথায় , ‘আমি কৃষকদের সঙ্গে দিল্লি যেতে চাই, কিন্তু পরিবারের পেট চালাতে হবে। এখনও আমি আমার মজুরি পাইনি’

আবেদনকারীদের একজন, জালনা জেলার আম্বাদ তালুকের ২৮ বছর বয়সী কৃষক নন্দকিশোর আরগাডে নিজের পাঁচ একর জমিতে তুলো চাষ করেন। তিনি বলছেন, “একজন চাষিই জানে তাকে কত কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। জল নেই। চার বছর ধরে বৃষ্টি হয়নি। আমাদের মাথার উপর ১.৫ লাখ টাকার ঋণ আছে। ঋণ মকুবের জন্য আবেদন করেছি কিন্তু এখনও ঋণ মুক্তি বা কোনওরকম সহায়তা পাইনি।” নন্দকিশোর কাজের খোঁজে শহরে ঘুরছেন। “আগামীকাল আমার একটা ইন্টারভিউ আছে, কিন্তু এখানে আমার থাকার কোনও জায়গা নেই। আজ রাতটা মুম্বইয়ের সিএসটি স্টেশনে ঘুমাবো,” তিনি জানালেন।

ঔরঙ্গাবাদ জেলার খুলদাবাদ তালুকের ধামনগাঁও গ্রামের অশোক গারুদকে রেলস্টেশনে টিনের ছাদ লাগানোর কাজে একজন ঠিকাদার ডোম্বিভলি নিয়ে এসেছিলেন। গ্রামে পাঁচ একর জমিতে তিনি বাজরা ও তুলো চাষ করেন। এই বছর গোলাপি বোলওয়ার্ম কীটের আক্রমণে তুলোর ফলন নষ্ট হয়ে গেছে বলে তিনি জানালেন। একটি সমবায় ব্যাঙ্ক এবং জনৈক মহাজনের কাছ থেকে তিনি ৭০,০০০ টাকা ঋণ নিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি স্টেশনে কাজ করছেন, তাঁর কথায়, “আমি কৃষকদের সঙ্গে দিল্লি যেতে চাই, কিন্তু পরিবারের পেট চালাতে হবে। এখনও আমি আমার মজুরি পাইনি। আমাকে কাজ করে যেতে হবে।”

কালু কোমাস্কার জানালেন, এই প্রচার কর্মসূচি ছিল “ডোম্বিভলির নাগরিকদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ। এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের সকল অটোচালক প্রতিটি নিত্যযাত্রীকে এই আবেদনপত্র দেবেন। কৃষি সংকট নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন এবং এই স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আর্জি রাখবেন।”

কিন্তু এই হাজার হাজার স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র দিয়ে কী হবে? দেবানের উত্তর, “পোস্টে পাঠানোর পক্ষে এগুলির ওজন খুব বেশি। ২৮ এবং ২৯শে নভেম্বর দিল্লির কৃষকদের সঙ্গে আমরা যখন পদযাত্রায় সামিল হব, তখন হয়তো আমরা নিজেরাই ভারতের রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেব।”

বাংলা অনুবাদ : স্মিতা খাটোর

Siddharth Adelkar

Siddharth Adelkar is Tech Editor at the People’s Archive of Rural India.

Other stories by Siddharth Adelkar
Translator : Smita Khator

Smita Khator is the Translations Editor at People's Archive of Rural India (PARI). A Bangla translator herself, she has been working in the area of language and archives for a while. Originally from Murshidabad, she now lives in Kolkata and also writes on women's issues and labour.

Other stories by Smita Khator